ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

খালেদা ইস্যুতে ২০১১ সালে হাইকোর্টে হট্টগোল হয়েছিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৯
খালেদা ইস্যুতে ২০১১ সালে হাইকোর্টে হট্টগোল হয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট ফটকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আপিল বিভাগে বিএনপিপন্থিদের হট্টগোলকে শীর্ষ আইনজীবীরা নজিরবিহীন, ন্যক্কারজনক, কলঙ্কজনক ও আদালত অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবীরা।

কিন্তু খালেদা জিয়া ইস্যুতে আদালতে হট্টগোল নতুন নয়। ২০১১ সালে অন্য মামলায় খালেদা জিয়া নাম আসার পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হাইকোর্টে হট্টগোল হইচই করেছিল।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদন দাখিলে সময় চেয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর আদালত কোনো ব্যর্থতা ছাড়াই ১১ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে শুনানি ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেন।

বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিএসএমএমইউ’র ভিসি জানিয়েছেন কিছু টেস্ট হয়েছে, কিছু বাকি আছে। তাই প্রতিবেদন দিতে সময় দরকার। এরপর আদালত কোনো ব্যর্থতা ছাড়াই ১১ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে শুনানি ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেন।

আরও পড়ুন>>সুপ্রিমকোর্টে বিএনপিপন্থিদের 'ন্যক্কারজনক' দিন!

এ সময় খালেদার জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন প্রতিবেদন রোববার বা সোমবার দিতে নির্দেশনার আবেদন জানান। কিন্তু তারিখ পরিবর্তন করেননি আদালত। এর পরপরই বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালত কক্ষে হইচই শুরু করেন। একপর্যায়ে আদালত এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন। কিন্তু আইনজীবীরা এজলাসে অবস্থান করে স্লোগান দিতে থাকেন।

বিরতির (১১টা থেকে সাড়ে ১১টা) পর ফের আদালত বসলে জয়নুল আবেদীন শুনানি করতে চান। কিন্তু আদালত তাতে সায় দেননি। এর মধ্যে হট্টগোলের কারণে অন্য মামলার শুনানিও ব্যাহত হয়। এ সময় বিএনপিপন্থি ২/১ জন সিনিয়র আইনজীবী আদালত কক্ষ থেকে বেরোতে চাইলে জুনিয়ররা বাধার মুখে পড়েন।

আরও পড়ুন>>বিএনপিপন্থিদের হট্টগোল কলঙ্কজনক-আদালত অবমাননা

পরবর্তী আপিল বিভাগের বিচারকাজের শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময়সীমা সোয়া একটার দিকে এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ। পরে আইনজীবীরাও বের হয়ে যান।

এর আগে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে সংবিধান ছুড়ে ফেলা নিয়ে ফজলুল হক আমিনীর বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শেষে আদেশে খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ আসায় হাইকোর্টের একটি হট্টগোল করেন আইনজীবীরা।

ওই হট্টগোলের একপর্যায়ে আদালত কক্ষের ভেতরে প্রিন্টারের ট্রে ছুড়ে মারা হয়। তবে ট্রেটি ফ্যানে লাগায় কেউ আক্রান্ত হননি।

তখনকার বিএনপির জোটের অন্যতম শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান আমিনী  লালবাগে এক আলোচনা সভায় বলেন, সংশোধিত সংবিধান নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেন।

এ বক্তব্যের পর এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট তলব করেন। এ তলবে মুফতি আমিনী হাজিরের পর আদেশের সময় আদালত তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ আনেন।

এ কথা বলার পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা তুমুল হট্টগোল শুরু করেন। তারা ‘নো, নো’ বলে চিৎকার করে উঠেন।

হট্টগোলের একপর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল দুপুরের বিরতির পর আদেশ দেওয়ার অনুরোধ করেন। এরপর বিচারপতিদের এজলাস ত্যাগের মাধ্যমে আদালত বিরতিতে চলে যায়।

বিকেল ৩টায় বিচারপতিরা আবার এজলাসে এসে আদেশ দিতে শুরু করেন। বিরোধীদলীয় নেত্রীর প্রসঙ্গটি আসার সঙ্গে সঙ্গে ফের আইনজীবীরা প্রতিবাদ করেন। পরে সিনিয়রদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।