অসুস্থতার গ্রাউন্ডে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ আসামির জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
পরে আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, ২০১৫ সালের ২৪ মে গ্রেফতার হয়ে মৌলভি নুরুল ইসলাম কারাগারে রয়েছেন। এর মধ্যে গত বছরের ১৭ এপ্রিল তিনি কারাগারে ব্রেইন স্ট্রোক করেন। এরপর তিনি প্যারালাইজড হয়ে যান। তার জামিন আবেদনের পর আদালত তার ভাই মো. জাকারিয়া এবং আইনজীবীর জিম্মায় জামিন দেন। জামিনে থাকা অবস্থায় তিনি ভাইয়ের জিম্মায় মহেশখালীর বাড়িতে থাকবেন। এবং ধার্য তারিখে আদালতে হাজির করাবেন। এইসব শর্তে মূলত জামিন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে এ মামলায় গত ২১ জানুয়ারি ক্যান্সার আক্রান্ত অপর আসামি ওসমান গণিকেও জামিন দিয়েছেন আদালত।
২০১৬ সালের ১৫ মার্চ আব্দুল মজিদসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগে (ফরমাল চার্জ) একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, ধর্মান্তর ও দেশান্তরকরণের ১৩টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে ৯৪ জনকে হত্যা, অসংখ্য নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন এবং ব্যাপক লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।
এর মধ্যে আসামি আবদুল মজিদ ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর মারা যায়। এর আগে এজাহারভুক্ত ১৯ আসামির মধ্যে তদন্ত চলাকালে গ্রেফতার হওয়ার পর মৌলভি শামসুদ্দোহা (৮২) অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ায় তার নামও আসামি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য মো. রশিদ মিয়া বিএ, সালামত উল্লাহ খান, মৌলভি নুরুল ইসলাম, বাদশা মিয়া ও ওসমান গণি। এর মধ্যে রশিদ মিয়া বিশেষ শর্তে জামিনে থাকা অবস্থায় মারা যান।
পলাতক ১২ আসামি হচ্ছেন-মৌলভি জাকারিয়া শিকদার, অলি আহমদ, মো. জালালউদ্দিন, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাবুল, মমতাজ আহম্মদ, হাবিবুর রহমান, মৌলভি আমজাদ আলী, আব্দুল শুক্কুর, মৌলভি রমিজ হাসান, মো. জাকারিয়া, মৌলভি জালাল এবং আব্দুল আজিজ।
২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম পার্টির সক্রিয় নেতাকর্মী ছিলেন। এর মধ্যে সালামত উল্লাহ খান মানবতাবিরোধী অপরাধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থক হিসেবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষে কাজ করেছিলেন অন্যরা। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা চালাতে সার্বিক সহায়তা এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেরাও ওই সব অপরাধ করেছেন আসামিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮
ইএস/ওএইচ/