কিন্তু রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আগামী ১ এপ্রিল রায় ঘোষণার নতুন দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করেন আদালত।
মামলায় মোট সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। তারা হলেন- খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, লস্কর লিয়াকত, মো. নূরে আলম, ইদ্রিস জামাই, জয়নাল, জামাই ফারুক ও মো. রুস্তম আলী।
এর মধ্যে কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের অন্য মামলায় ২০০৪ সালের ১০ মে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আসামি লস্কর লিয়াকত বিচার চলাকালে মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আসামি নূরে আলমকে রাষ্ট্রপক্ষ রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করে।
তাই বিচারে সোপর্দ করা হয় চারজন আসামিকে। এর মধ্যে মামলার দুই আসামি জামাই ফারুক ও ইদ্রিস ২২ বছর ধরে এ মামলায় কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন। অপর দুই আসামি জয়নাল ও রুস্তম আলী পলাতক।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ৫ মার্চ সকাল ৭টায় আজিজ চাকলাদার ওরফে ঢাকাইয়া আজিজ লালবাগ রোডের বাসা থেকে খুলনা যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। আজিজকে খুঁজে না পেয়ে ছোট ভাই মো. বাচ্চু মিয়া লালবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
তবে জিডির ১২ দিন পর ১৭ মার্চ বাচ্চু একটি অপহরণ মামলা করেন। যেখানে মাকসুদ এবং আমানুল্লাহ নামে দুজনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মাকসুদ এবং আমানুল্লাহর সঙ্গে ভাঙা কাচের ব্যবসা করতেন আব্দুল আজিজ চাকলাদার। তারা দুজন আজিজের কাছে ব্যবসায়িক কারণে ২৫ হাজার টাকা পেতেন।
এই টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এ কারণে মাকসুদ ও আমানুল্লাহ তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
মামলার এক বছর পর তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে সাতজনকে অভিযুক্ত করা হলেও এজাহারে থাকা মাকসুদ ও আমানুল্লাহর নাম বাদ পড়ে। এই মামলার তদন্ত চলাকালে রূপসা নদী থেকে একটি মাথার খুলি ও হাড্ডি উদ্ধার করা হয়।
খালিশপুর থানার অন্য একটি মামলার জব্দ তালিকা থেকে প্রাপ্ত ওই মাথার খুলি ও হাড্ডি ঢাকাইয়া আজিজের উল্লেখ করে বলে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করে।
২০০০ সালেই এ মামলার অভিযোগ গঠন হয়। অভিযোগ গঠনের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান আসামিরা। এরপর হাইকোর্ট মামলার বিচার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। ২০১৭ সালে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ ওঠে গেলে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
অভিযোগপত্রে থাকা ১৯ সাক্ষীর মধ্যে ৬ জন এবং রাজসাক্ষী হিসেবে নূরে আলম আদালতে সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ১৪ জানুয়ারি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
কেআই/এমএ