সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সপ্তম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মাসুদ শাহ (২২), হারুন হাওলাদার (২৪), সাজেদুল ইসলাম সজল (২৪), সোহাগ শরীফ (২৩), সাকিব হাসান সিজার (২৫), মেরাজুল শেখ (২৫), আনোয়ার হোসেন হৃদয় (২৪) ও শাহ ইমাম হাসান রনি (২৭)।
আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা সাজেদুল ইসলাম সজল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি সাত দণ্ডপ্রাপ্তরা পলাতক রয়েছেন। এর মধ্যে মাসুদ শাহ ও হারুন শুরু থেকেই পলাতক এবং বাকিরা জামিন নিয়ে পলাতক।
বাদীপক্ষের আইনজীবী দুলাল মিয়া বাংলানিউজকে জানান, রায়ে সন্তুষ্ট নয় বাদীপক্ষ। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়াটা উপযুক্ত সাজা বলে আমরা মনে করছি না। আমরা এ রায়ে ক্ষুব্ধ ও রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করবো।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উত্তর যাত্রাবাড়ীর রজনীগন্ধা রোডের নিজ বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন নিগার। ২০১৫ সালের ২১ মে তাদের বাড়ির নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন দু’জন যুবক। তারা নিজেদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দেন।
ভাড়া নেওয়ার পরদিন রাতে ওই দুই যুবক বাড়িওয়ালার ফ্ল্যাটে কলিং বেল চাপে। এ সময় নিগার দরজা খুলে দেন। তখন পেছন থেকে তাদের সঙ্গে থাকা আরও পাঁচ থেকে ছয় জন যুবক এসে জোর করে ফ্ল্যাটের ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় নিগার চিৎকার করলে তার মাথায় চাপাতির উল্টো পাশ দিয়ে আঘাত করে। এরপর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এদিকে তার বাবা-মাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়। এরপর তারা ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে বাহিরের দিকে ছিটকানি আটকিয়ে চলে যায়। পরে তাদের চিৎকারে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজন এসে হাত-পা বাঁধা বাবা-মাকে উদ্ধার করেন। এরপর পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে নিগারের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদনের পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় পরদিন ২০১৫ সালের ২৩ মে নিহত নিগারের মা তহুরা খাতুন (৬০) বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পরিমল চন্দ্র দাস মামলাটি তদন্ত করে ওই আট জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৯৬ ধারায় ডাকাতির সময় হত্যার অভিযোগ এনে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটির বিচার শুরু হয়।
গত ২৮ জানুয়ারি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এ রায় দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০
কেআই/আরআইএস/