বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার শুনানি হবে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি (রোববার) অ্যাডভান্স (উন্নত) ট্রিটমেন্টের জন্য খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কিনা, সম্মতি দিলে চিকিৎসা শুরু হয়েছে কিনা এবং শুরু হলে কী অবস্থা তা জানাতে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্যকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বুধবারের (২৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে এ প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে পাঠাতে হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন রেখেছেন হাইকোর্ট।
ওই আদেশ অনুসারে বুধবার বিএসএমএমইউ থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) আবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন।
১৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) এই আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন।
এর আগে, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ মামলায় তার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন, তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। আপিলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সেই আবেদন এখনো আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।
২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অন্য তিন আসামিরও।
দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য তিন আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এরপর ওই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। পরে গত বছরের ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত ও সম্পত্তি জব্দ করার ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন।
এরপর গত ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে জামিন চান খালেদা জিয়া। এ আবেদনের শুনানির পর ১২ ডিসেম্বর সেটি খারিজ হয়ে যায়।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
ইএস/জেডএস