রোববার (১০ মে) ভিডিও কনফারেন্সে সব বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠকের পর (ফুলকোর্ট) এসব বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি।
এ বিষয়ে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল আলম ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে এবং শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া সাধারণ ছুটিকালীন ও হাইকোর্ট বিভাগের অবকাশকালীন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’এবং কোর্ট কর্তৃক জারি করা প্র্যাকটিসের ডাইরেকশন অনুমোদন করতো: তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য চেম্বার জজ হিসেবে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানকে প্রধান বিচারপতি মনোনয়ন দিয়েছেন।
বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান আগামী ১৪ ও ২০ মে সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে চেম্বার কোর্টে শুনানি গ্রহণ করবেন।
হাইকোর্টের বিষয়ে পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে এবং শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া সাধারণ ছুটিকালীন ও হাইকোর্ট বিভাগের অবকাশকালীন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’এবং কোর্ট কর্তৃক জারি করা প্র্যাকটিসের ডাইরেকশন অনুমোদন করতো:তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য বেঞ্চগুলো গঠন করা হলো।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান অতীব জরুরি সব ধরনের রিট ও দেওয়ানি মোশন এবং তৎসংক্রান্ত আবেদনপত্র নেবেন। অতীব জরুরি সব ধরনের ফৌজদারি মোশন এবং তৎসংক্রান্ত আবেদনপত্র নেবেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। এছাড়া বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার সাকশেসন আইন, অ্যাডমিরালিটি কোর্ট আইন, ব্যাংক কোম্পানি আইনসসহ কয়েকটি আইনের অধীনে আবেদনপত্র,আপিল শুনানি গ্রহণ করবেন।
তবে কখন বসবেন তা এসব আদেশে উল্লেখ নেই।
গত ২৬ এপ্রিল বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ রেখে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এজন্য সুপ্রিমকোর্টের রুলস কমিটি পুনরায় গঠন এবং ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওই দিন প্রথমবারের ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের ৮৮ জন বিচারপতি।
এ অবস্থায় গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
২ দিন পর ৯ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধাদেশে বলা হয়, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাইকোর্ট বিভাগ, সময় সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাই থাকুক না কেন, যেকোনো আদালত এ অধ্যাদেশের ধারা ৫ এর অধীন জারি করা প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) সাপেক্ষে, অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষরা বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করে যেকোনো মামলার বিচার বা বিচারিক অনুসন্ধান বা দরখাস্ত বা আপিল শুনানি বা সাক্ষ্যগ্রহণ বা যুক্ততর্ক গ্রহণ বা আদেশ বা রায় দিতে পারবে। ’
অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষ বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি বা ক্ষেত্রমতে দেওয়ানি কার্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।
কোনো ব্যক্তির ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলে ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা অন্য কোনো আইনের অধীন আদালতে তার সশরীরে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা শর্ত পূরণ হয়েছে বলে গণ্য হবে।
এদিকে রোববার ভার্চ্যুয়াল শুনানির মাধ্যমে সুপ্রিমকোর্টে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা প্রসঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বিচরপতির সভাপতিত্বে উভয় বিভাগের বিচারপতিরা এতে অংশ নেন।
ফুলকোর্ট সভায় ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর আওতায় উচ্চ আদালত এবং নিম্ন আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুমোদিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২০
ইএস/ওএইচ/