বুধবার (১৩ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
চারদিনের রিমান্ড শেষে মুমিনকে বুধবার আদালতে হাজির করে ফের পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার ওসি শামীম উর রশীদ।
গত ৮ মে মুমিনসহ তিনজনের চারদিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। রিমান্ড চলাকালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ ও বিনিয়োগ বোর্ডের কর্মচারী নাজিম উদ্দিন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। নাজিম উদ্দিনের নাম মামলার এজাহারে না থাকলেও তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমাও গ্রেফতারের পর দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা তিনজনই বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এর আগে পুলিশের তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার রুবাইয়াত জামান বলেন, জালিয়াতির এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে গত ৫ মে তরিকুল, অফিস সহকারী ফাতেমা ও ফরহাদ নামে একজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তরিকুলকে ভোলা থেকে গ্রেফতর করা হয়।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়। এ নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার পর তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।
পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে এলে তিনি এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি বলে ফোনে তরিকুলকে জানিয়ে দেন।
এরপরই তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে ফরহাদ নামে একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। সেই নথিতে তরিকুল ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। প্রায় এক মাস আগে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
এ নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ করেন এবং হস্তান্তরের পরে আরেক দফায় ১০ হাজার টাকা তার ছেলের বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নেন বলে মামলায় বলা হয়।
প্রায় এক মাস আগের ঘটনা হলেও করোনা ভাইরাসের কারণে মামলা দিতে দেরি হয়েছে বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২০
কেআই/এফএম