ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

প্রধানমন্ত্রীর ন‌থি জা‌লিয়া‌তি, ত‌রিকু‌লের স্বীকা‌রো‌ক্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৯ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২০
প্রধানমন্ত্রীর ন‌থি জা‌লিয়া‌তি, ত‌রিকু‌লের স্বীকা‌রো‌ক্তি

ঢাকা: নথি জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বদলে দেওয়ার কথা স্বীকার ক‌রে আদাল‌তে জবানব‌ন্দি দি‌য়ে‌ছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ব‌হিষ্কৃত সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম মুমিন। 

শুক্রবার (১৫ মে) ঢাকার মে‌ট্রোপ‌লিটন ম‌্যা‌জি‌স্ট্রেট ইয়াস‌মিন আরা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় এই জবানব‌ন্দি রেকর্ড ক‌রেন।  

এর আগে গত ১৩ মে দ্বিতীয় দফায় দুই দি‌নের রিমা‌ন্ডে নেওয়া হয় ত‌রিকুল‌কে।

সেই রিমা‌ন্ডের এক‌দিন বা‌কি থাক‌তেই তার জবানব‌ন্দি রেক‌র্ডের আবেদন ক‌রেন তেজগাঁও থানার প‌রিদর্শক, তদন্ত কর্মকর্তা শামীম উর রশীদ। সেই আবেদন মঞ্জুর হলে তরিকুলের তার জবানব‌ন্দি রেকর্ড করা হয়।  

এর আগে গত ৮ মে তরিকুলসহ ৩ জনের চার দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। ওই রিমান্ড চলাকালে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ ও বিনিয়োগ বোর্ডের কর্মচারী নাজিম উদ্দিন দোষ স্বীকার করে আদাল‌তে জবানবন্দি দেন। মামলার এজাহারে নাজিম উদ্দিনের নাম না থাকলেও পরবর্তী সময়ে তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে।  প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমাও গ্রেফতারের পর দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তারা ৩ জনই বর্তমা‌নে কারাগারে।

জালিয়াতির এই ঘটনায় গত ৫ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে তরিকুল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা ও ফরহাদ নামে একজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তরিকুলকে ভোলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।  

মামলার বিবরণী‌তে জানা যায়, কিছুদিন আগে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদের জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরঃকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়। সেই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হলে তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।

পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে গেলে তিনি ফোনে তরিকুলকে জানান যে, এম আবদুস সালাম আজাদ কোষাধ্যক্ষ হিসেবে অনুমোদন পাননি।  

এরপর তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের করে ফরহাদ নামে একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। সেই নথিতে ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন তরিকুল। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন তিনি। প্রায় এক মাস আগে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

ওই নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন এবং হস্তান্তরের পর আরেক দফায় তার ছেলের বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন বলে মামলায় বলা হয়।

প্রায় এক মাস আগের ঘটনা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে মামলা দিতে দেরি হয় বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২০
কেআই/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।