রোববার (১৪ জুন) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির জন্য কার্যতালিভুক্ত রয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনটি করেছেন আইনজীবী এএম জামিউল হক, মো. নাজমুল হুদা, মোহাম্মাদ মেহেদী হাসান এবং ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান।
পরে একেএম এহসানুর রহমান বলেন, ১১ মে সরকার দুটি নির্দেশনা জারি করেন।
একটি নির্দেশনায় সরকারি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণের পর থেকে সরকারি হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ডায়ালাইসিস, হৃদরোগ, ক্যানসার এবং অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসা গ্রহণকারীরা সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এসব রোগের চিকিৎসা অব্যাহত রাখার বিষয়ে বিভিন্ন সময় মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একাধিকবার নির্দেশনা জারি হয়েছে। এমতাবস্থায় সরকারি হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য নিম্নোক্ত নির্দেশনা নির্দেশক্রমে জারি করা হয়েছে।
সব সরকারি হাসপাতালের কোভিড-১৯ সন্দেহে আগত রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
চিকিৎসা সুবিধা থাকা সত্ত্বেও জরুরি চিকিৎসার জন্য আগত কোনো রোগীকে কোনোভাবেই ফেরত দেওয়া যাবে না। রেফার করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি সুনিশ্চিত করে রেফার করতে হবে।
দীর্ঘদিন ধরে যেসব রোগী কিডনি ডায়ালাইসিস করছেন অথবা কোভিড হাসপাতাল থেকে ডায়ালসিসের জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে এবং হৃদরোগ ও ক্যানসারসহ অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করছেন তারা কোভিড আক্রান্ত না হয়ে থাকলে তাদের চিকিৎসাও অব্যাহত রাখতে হবে।
এ নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে বা কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিকের প্রতি নির্দেশনায় বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণের পর থেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সাধারণ রোগী চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ডায়ালাইসিসসহ চিকিৎসা গ্রহণকারী রোগীরা সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের সম্মুখীন বাধার হচ্ছেন। এসব রোগীদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখার বিষয়ে বিভিন্ন সময় মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত একাধিক সভার মাধ্যমে অনুরোধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেও একাধিকবার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বার বার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এমতাবস্থায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সাধারণ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য নিম্নোক্ত নির্দেশনা নির্দেশক্রমে জারি করা হয়েছে। সব বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিকে সন্দেহভাজন কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে।
চিকিৎসা সুবিধা থাকা সত্ত্বেও জরুরি চিকিৎসার জন্য আগত কোনো রোগীকে কোনোভাবেই ফেরত দেওয়া যাবে না। রেফার করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি সুনিশ্চিত করে রেফার করতে হবে।
দীর্ঘদিন ধরে যেসব রোগী কিডনি ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন চিকিৎসা গ্রহণ করছেন তারা কোভিড আক্রান্ত না হয়ে থাকলে তাদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হবে।
এ নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে বা কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধান অনুসারে লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এহসানুর রহমান বলেন, এমন নির্দেশনা থাকার পরও অনেক রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন। এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি করা হয়েছে।
রিট আবেদনে ১১ মে’র সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও সাধারণ রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া এবং সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এছাড়া ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিতে আদেশ জারি করতে আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে যারা এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছে না তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিতে আবেদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২০
ইএস/এএটি