পাশাপাশি উপসর্গ নিয়ে দুইজন কর্মচারী মারা গেছেন। কিন্তু তাদের এখনও করোনা শনাক্তের রেজাল্ট আসেনি।
শনিবার (২০ জুন) এ তথ্য জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
তিনি বলেন, ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে বিচারকার্য পরিচালনা এবং দায়িত্ব পালনের সময় সারাদেশে এ পর্যন্ত অধস্তন আদালতে ২০ জন বিচারক, সুপ্রিম কোর্টের ২৪ জন কর্মচারী এবং অধস্তন আদালতের ৫৯ জন কর্মচারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন আছেন আরও ছয়জন বিচারক। পাশাপাশি উপসর্গ নিয়ে গত ১৮ জুন মাদারীপুর জেলা জজ আদালতের জারিকারক মো. কাউসার এবং ১৯ জুন নওগাঁ জেলা জজ আদলতের অফিস সহায়ক মহিউদ্দিন মোহনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের এখনও করোনা পরীক্ষার ফলাফল আসেনি।
সর্বপ্রথম গত ২২ মে নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ শাহাজাহান কবির করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং এরপরে মুন্সিগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট বেগম রোকেয়া রহমান আক্রান্ত হন। বর্তমানে তারা দুজন সুস্থ হয়ে আবার কাজে যোগদান করেছেন।
এ মুহূর্তে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন লালমনিরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আহমেদ। তাকে প্লাজমা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক বেগম শামীম আহমেদ। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আছেন জয়পুরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রুস্তম আলী।
বাকি যেসব বিচারক বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসস্থানে চিকিৎসাধীন আছেন, তারা হচ্ছেন- কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কিরণ শংকর হালদার, ভোলার জেলা ও দায়রা জজ এবিএম মাহমুদুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব এস মোহাম্মদ আলী, কক্সবাজরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.রেজাউল করিম, বরিশালের অতিরিক্ত জেলা জজ মুহাম্মদ মাহবুব আলম, সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ মাসুদ পারভেজ, নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ মাসুদ জামান, কুড়িগ্রামের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. তৈয়ব আলী, নেত্রকোনার সহকারী জজ মো. মেহেদী হাসান, চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে, চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ নোমান, ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ তসরুজ্জামান, নোয়াখালী হাতিয়া চৌকি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নিজাম উদ্দিন এবং ডিপিডিসি-২ এর স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রেজমিন সুলতানা।
সুপ্রিম কোর্ট থেকে আক্রান্ত বিচারক এবং কর্মচারীর চিকিৎসা বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা জজদের অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া তাদের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং সময় সময় প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করা হচ্ছে বলে জানান সাইফুর রহমান।
এর আগে গত ১৪ জুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অধস্তন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মকর্তা-কার্মচারীদের তথ্য চেয়েছিলেন হাইকোর্ট প্রশাসন। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক স্মারক থেকে এ তথ্য চেয়েছিলেন।
‘করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত অধস্তন আদালতে কর্মরত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তথ্য বিবরণী প্রেরণ প্রসঙ্গে’ শীর্ষক স্মারকে বলা হয়, উপযুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হলে অধস্তন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের তথ্য বিবরণী ১ নম্বর ছক মোতাবেক এবং সহায়ক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের তথ্য বিবরণী ২ নম্বর ছক মোতাবেক মেইলযোগে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
সব জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, সব বিভাগীয় স্পেশাল জজ/স্পেশাল জজসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ স্মারকের অনুলিপি পাঠানো হয়। এরপর সারাদেশ থেকে এ তথ্য হাইকোর্টে আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২০
ইএস/টিএ