রোববার (২৮ জুন) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান কাছে সমিতির সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান স্বাক্ষরিত এই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে নিয়মিত আদালত চালুর বিষয়েও মতামত দেন সমিতির নেতারা।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচ এম মাসুম এই চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছেন।
পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি। বিগত ১১ মে থেকে ভার্চ্যুয়াল আদালত ব্যবস্থা চালু আছে। তবে এই আদালত নিয়ে অধিকাংশ আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। যেহেতু আইনজীবীরা শুধু আইন পেশার ওপর নির্ভরশীল, তাই অধিকাংশ আইনজীবীই অর্থকষ্টে আছেন।
আইনজীবীদের প্রশিক্ষণবিহীন ভার্চ্যুয়াল আদালত অধিকাংশ ক্ষেত্রে সফলতার মুখ দেখছে না। তাই ভার্চ্যুয়াল আদালতের কারণে ঐতিহ্যবাহী বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে নিয়মিত আদালত খুলে দেওয়া প্রয়োজন।
এমতাবস্থায় প্রস্তাবিত আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার আইন ২০২০ জাতীয় সংসদে পাস না করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
গত ২৬ এপ্রিল বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ রেখে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুই দিন পর ৯ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশে বলা হয়, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাইকোর্ট বিভাগ, সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাই থাকুক না কেন, যেকোনো আদালত এই অধ্যাদেশের ধারা ৫ এর অধীন জারি করা প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) সাপেক্ষে, অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষরা বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করে যেকোনো মামলার বিচার বা বিচারিক অনুসন্ধান বা দরখাস্ত বা আপিল শুনানি বা সাক্ষ্য গ্রহণ বা যুক্ততর্ক গ্রহণ বা আদেশ বা রায় দিতে পারবে।
সেই অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত করতে গত ২৩ জুন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার বিল-২০২০’ সংসদে তোলেন। পরে বিলটি পাঁচ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দিতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
নিয়ম অনুযায়ী অধ্যাদেশ জারির পর তা সংসদে তোলা হয় গত ১০ জুন। অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত করতে হলে চলমান অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের তারিখ হতে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করে অনুমোদন করাতে হবে। ৩০ দিন অতিবাহিত হলে অধ্যাদেশটির কার্যকারিতা লোপ পাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
কেআই/এএটি