বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সকালে আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে এ দাবি করেন সাহেদ।
রিমান্ড শুনানির সময় কাঠগড়া থেকে তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, আমি কি একটা কথা বলতে পারি? এ সময় তিনি কান্নাকাটি শুরু করেন।
এরপর বিচারকের উদ্দেশে বলেন, আমি দেড় মাস ধরে করোনায় আক্রান্ত। আমার বাবা করোনায় মারা গেছেন।
তিনি বলেন, আমি মার্চে প্রথম দিন যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যাই, তখন তারা আমাকে আমার হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করতে বলেন। তখন আমি বলি আমার লাইসেন্সের ঘাটতি আছে। তখন তারা বলে যে লাইসেন্স নবায়নের জন্য সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দেন। আমি তাদের কথা মতো টাকা জমা দেই। সারা দেশে করোনা চিকিৎসার কাজ বেসরকারিভাবে আমরাই শুরু করেছি। তারপরেও আমার সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় আমিই প্রথম সরকারকে বেসরকারি হাসপাতাল দিই। করোনার চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমি এবং আমার পরিবার আক্রান্ত হই।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাহেদ, মাসুদ ও তারেক শিবলীকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে প্রতারণা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম শুনানি শেষে সাহেদ এবং মাসুদের ১০ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া সাহেদের অন্যতম সহযোগী তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বারের মতো সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকার মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু। আসামি পক্ষে আইনজীবী নাজমুল হোসেন রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিন আবেদন করেন।
শুনানির একপর্যায়ে সাহেদ আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, লাইসেন্স নবায়নের জন্য সরকারি ফি সোনালী ব্যাংকে জমা দিয়েছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লাইসেন্স নবায়নে বিলম্ব করেছে। এখানে আমাদের কোন দায় নেই।
এর আগে বুধবার (১৫ জুলাই) রাতে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার হাজতখানায় রাখা হয় সাহেদকে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে নিয়ে আদালতে পৌঁছায় পুলিশ। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার থেকে জানানো হয়েছে, আদালতে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে।
ওই দিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় অবৈধ অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তার বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায়ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাস পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট দেওয়াসহ নানা প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে গত ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র্যাব। সেই মামলায় মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন মোট আটজন।
গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। পরীক্ষা ছাড়াই করোনার রিপোর্ট ও সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল হাসপাতালটি। পরে ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের দুই শাখা ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২০
কেআই/ওএইচ/