কক্সবাজার: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় কক্সবাজারের রামু থানায় মাদকদ্রব্য আইনের মামলায় জামিন পেয়েছেন সিনহার সহযোগী স্টামর্ফোড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নির্মাতা শিপ্রা দেবনাথ।
অন্যদিকে সিনহার অপর সহযোগী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের জামিন আবেদনের শুনানির দিন আগামী সোমবার (১০ আগস্ট) নির্ধারণ করা হয়েছে।
রোববার (৯ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেন শামীমের আদালতে জামিন শুনানি শেষে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল পর্যন্ত জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
শিপ্রার জামিন ও আইনি সহায়তা দিতে পাশে দাঁড়িয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
সংগঠনটির আইনজীবী অরুপ বড়ুয়া তপু বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী শিপ্রা দেবনাথের জামিনের জন্য আবেদন করেছিলাম। বিজ্ঞ আদালত পুলিশ রিপোর্ট দেওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
আসকের এ আইনজীবী আরও বলেন, আমরা মনে করছি এটি একটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। তাই আমরা আইনি সহায়তা দিতে শিপ্রা দেবনাথের পাশে দাঁড়িয়েছি।
শিপ্রা দেবনাথের ভাই তুষার দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আদালতের আদেশে সন্তুষ্ট। আমাদের এমন দুঃসময়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) পাশে দাঁড়িয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
তবে এখন আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রের কাছে আমরা নিরাপত্তা চাই।
গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আসার পথে শামলাপুর চেকপোস্টে তল্লাশির নামে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। ঘটনার পর রাত ১২টার দিকে সিনহা হিমছড়ির যে হোটেলটিতে অবস্থান করেন সেই নীলিমা রিসোর্টে হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসএম আতিক উল্লাহ’র নেতৃত্বে অভিযান চালায় পুলিশ।
সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী শিপ্রা দেবনাথকে আটক করে তার বিরুদ্ধে মাদকের মামলা দিয়ে আলালতে পাঠানো হয়। এ মামলার বাদী হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম।
পুলিশের দাবি, অভিযানে রিসোর্টটির কক্ষ থেকে পাঁচটি বিদেশি মদের বোতল, এক লিটার বাংলা মদ ও এক পুরিয়া গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
সিফাতের জামিন শুনানি সোমবার
অন্যদিকে পুলিশের গুলিতে নিহত সাবেক মেজর সিনহার টিমের সদস্য সাহেদুল ইসলাম সিফাতের জামিন এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের আবেদন করা হলে বিজ্ঞ আদালত শুনানির জন্য সোমবার (১০ আগস্ট) দিন ধার্য্য রাখেন।
গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) তদন্তের দায়িত্ব দেন।
গত ৬ আগস্ট এ মামলায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের আইসি মো. লিয়াকত আলীসহ সাত আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। মামলার শুনানিতে র্যাবের পক্ষে প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালতের বিচারক ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি চারজনকে কারাফটকে দু’দিন করে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২০
এসবি/আরবি/