ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নাচোলে ইউএনও-সার্ভেয়ারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২০
নাচোলে ইউএনও-সার্ভেয়ারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা উচ্ছেদ করা বাড়ি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তা সংলগ্ন খাস জমিতে তৈরি বাড়ির কিছু অংশ উচ্ছেদ করায় নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ৭ সরকারি চাকরিজীবীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী।

উপজেলার গনইর গ্রামের মৃত গোল মোহাম্মদের ছেলে মুকুল আলী ২৩ জুলাই মামলা দায়েরের পর সোমবার (১০ আগস্ট) আদালত থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নোটিশ করা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

জানা গেছে, উপজেলার নাচোল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গনইর গ্রামের ৫১ জন এলাকাবাসীর সই করা একটি আবেদন ও তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২০ জুলাই ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানার নিদের্শে রাস্তায় চলাচলে সমস্যা হওয়ায় কয়েকটি বাড়ির কিছু অংশ উচ্ছেদ করা হয়।

নাচোল এসিল্যান্ড অফিসের সার্ভেয়ারসহ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা  সরেজমিনে উপস্থিত থেকে সরকারি রাস্তার উপরে থাকা কয়েকটি মাটির বাড়ির আংশিক ভেঙে জনগণ ও যানবাহন চলাচলের উপযোগী করেন। ঘটনাস্থলটি গনইর মোজার ১৮৭ দাগের রেকর্ডীয় ০.১৯ একর জমিতে। যার শ্রেণী ডহর এবং ১ নম্বর খতিয়ানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার রাজশাহী নামে রেকর্ডকৃত বলে জানা গেছে।  

এর আগে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর গনইর গ্রামবাসীর পক্ষে আব্দুল খালেক, ইউসুফ আলী, ইয়াসিন আলী, মনিরুল ইসলামসহ ৫১ জনের সই করা একটি আবেদনপত্র নাচোল ইউএনও বরাবর দেওয়া হয়।  ইউএনও বিষয়টি তদন্ত করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকতা মো. রফিকুল আলমকে দায়িত্ব দেন। তদন্ত রির্পোট পাওয়ার পর গত ২০ জুলাই অভিযোগকারীদের চলাচলের সুবিধার্থে সরকারি রাস্তায় থাকা একই গ্রামের মৃত গোল মোহাম্মদের ছেলে মুকুল, মতিন ও মনজুর মাটির দেওয়ালের আংশিক অংশ ভেঙে ফেলা হয়।

এ ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকদের পক্ষে মুকুল ২৩ জুলাই ইউএনও সাবিহা সুলতানা, সার্ভেয়ার মো. মাহমুদুল হাসান সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জজ আদালতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা দায়ের করেন। (যার মামলা নম্বর ০১/২০) ।  

এ ব্যাপারে মামলার বাদী মো. মুকুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এতদিন থেকে জমিটি ভোগ- দখল করে আসছি, কিন্তু আমাকে নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ কেন বাড়ি ভাঙা হলো, এ জন্য আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছি।

এ ব্যাপারে নাচোল ইউএনও সাবিহা সুলতানা দাবি করেন, তিনি জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য রাস্তা উন্মুক্ত করতে ৫১ জনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে উচ্ছেদের ৬ মাস আগে থেকে মৌখিকভাবে নোটিশ দিয়েছি কিন্তু তারা স্থাপনা না সড়ানোয় ২০ জুলাই কয়েকটি বাড়ির কিছু অংশ উচ্ছেদ করা হয়।

তিনি আরও দাবি করেন, অভিযোগকারী ব্যক্তির বাড়ির পুরো অংশ খাস জমিতে হলেও শুধুমাত্র রাস্তার জন্য এবং ১০-১২টি বাড়ির লোকজনের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তার উপর নির্মিত বাড়ির গোয়াল ঘরের একটি দেয়ালের কিছু অংশ উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু ওই ব্যক্তি আরও বেশি করে ভাঙচুর করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর দায় চাপাচ্ছে।  
 
তিনি আরও জানান, সরকার জনস্বার্থে অথবা সরকারের প্রয়োজনে সরকারি জায়গায় থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে পারে। তাই মামলা নিয়ে প্রশাসন বিচলিত নয় আর মামলার নোটিশ তিনি সোমবার বিকেলে পেয়েছেন। নোটিশের জবাব এবং মামলা আইনগতভাবেই মোকাবিলা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।