ঢাকা: ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাাংক) চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ (এসকে সিনহা) ১১ আসামির মধ্যে চারজন আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ শেখ নাজমুল আলম তাদের পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত তাদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
এই চার আসামি হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎফুল হক, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, টাঙ্গাইলের মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন কুমার সাহা।
এ মামলায় করাগারে আছেন আসামি মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী। এছাড়া আগেই জামিন পান এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ক্রেডিট প্রধান কাজী সালাহউদ্দিন ও সাবেক এমডি এবিএম শামীম।
এসকে সিনহাসহ মোট চার আসামি এখন পলাতক। বাকিরা হলেন- ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সফিউদ্দিন আসকারী আহমেদ, সাভারের শ্রীমতি সান্ত্রী রায় (সিমি) ও শ্রী রনজিৎ চন্দ্র সাহা।
এদিকে সোমবার এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। এই আদালতে এদিন সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
তার জবানবন্দি গ্রহণের পর আসামিপক্ষ জেরা করেন। এরপর বিচারক পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৫ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
গত ১৩ আগস্ট একই আদালত এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। সেদিন এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৮ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বিচারের জন্য এই আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ।
গত ৯ ডিসেম্বর ১১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। অভিযোগত্রে ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতীর (বাবুল চিশতী) নাম নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর তদন্তকালে এজাহারনামীয় আসামি ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক (গুলশান) মো. জিয়া উদ্দিন আহমেদ মারা যাওয়ায় তাকে এই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যদের লাভবান করে অবৈধভাবে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও বিভিন্ন পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানান্তর করে অর্জিত অপরাধলব্ধ আয় উত্তোলন, স্থানান্তর ও নিজেদের ভোগদখলে রেখে অবৈধ প্রকৃত উৎস অবস্থান গোপন করে পাচার করেছেন বা পাচারের ষড়যন্ত্রে সংঘবদ্ধভাবে সম্পৃক্ত থেকে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
সেই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত ৫ জানুয়ারি এসকে সিনহাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগ মামলাটি করে দুদক। গত ৪ ডিসেম্বর এই মামলায় অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় সংস্থাটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২০
কেআই/এএ