ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ঘুষের মামলায় বা‌ছির-মিজানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২০
ঘুষের মামলায় বা‌ছির-মিজানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু খন্দকার এনামুল বাছির এবং পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান (ডানে)

ঢাকা: দুর্নী‌তি দমন কমিশনের (দুদক) প‌রিচালক খন্দকার এনামুল বাছির এবং পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।  

বুধবার (১৯ আগস্ট) ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ শেখ নাজমুল আলমের আদালতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী দুদকের প‌রিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা।

তার জবানবন্দিগ্রহণের পর আসামিপক্ষের জেরা শুরু হলেও তা শেষ হয়নি। অসমাপ্ত জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

গত ১৯ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদ‌কের প‌রিচালক শেখ মো. ফানা‌ফিল্যা এ মামলায় অভিযোগপত্র দা‌খিল করেন। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মহানগর সি‌নিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটি বিচারের জন্য চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।  

গত ১৮ মার্চ এ মামলায় তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ‌্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন একই আদালত। ওইদিন সাক্ষ‌্যগ্রহণের জন‌্য ২৩ মার্চ দিন ধার্য ক‌রেন আদালত। তবে করোনা পরিস্থতিতে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ আর শুরু হচ্ছিল না।

গত ৫ আগস্ট থেকে নিয়মিত আদালত চালুর পর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১২ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়। তবে সেই নির্ধারিত দিনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা অসুস্থ থাকায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে উপস্থিত হননি। তাই বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৯ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

গত বছর ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।

এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি গত বছর ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।

অন্যদিকে, ২০১৮ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকাকে জোর করে বিয়ে করার সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। ওই ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরসহ দুদকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে বিতর্কিত ডিআইজি মিজানকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। পরে গত বছর ২৫ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্তের কথা সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এরপর গত বছর ১৬ জুলাই দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের দল নেতা শেখ মো. ফানাফিল্যা মানি লন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।  

এরপর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে। অপরদিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার ডিআইজি মিজানকে এ মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২০
কেআই/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।