ঢাকা: বেড়ানোর কথা বলে লঞ্চের কেবিনে নিয়ে প্রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র হাবিবুর রহমানে সিফাতকে (১৭) হত্যা করে মরদেহ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় আসামি মেহেদী হাসান নেহালের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) এ আদেশ দেন।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আইয়ুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
আদেশের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন ড. মো. বশির উল্লাহ।
গণমাধ্যমকে মামলাটির তদন্ত তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম বলেন, খুনের মূল পরিকল্পনাকারী মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র তামিমের সঙ্গে হাবিবুর রহমান সিফাতের বন্ধুত্ব ছিল। এ বছর সিফাত প্রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। তারা সিনিয়র ও জুনিয়র হলেও একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। মাঝে-মধ্যে আড্ডা দিতেন। তারা ক্রিকেট খেলতেন। সিফাত থাকত নানা বাড়ি কেরানীগঞ্জের ওয়াশপুরে। একই এলাকায় ভাড়া থাকতেন তামিম। মিথ্যা তথ্য দিয়ে সিফাতকে সদরঘাট এলাকায় ঘুরতে নিয়ে যান তামিম। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তামিম পানির বোতলে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নেন।
এছাড়া বস্তা, ছোরা ও গামছা ব্যাগে করে নিয়ে যান। এদিকে, আগে থেকে লঞ্চঘাটে অবস্থান করা নেহাল পারাবত-৯ লঞ্চের তিন তলার একটি কেবিন বুকিং করে। লঞ্চে উঠে তারা সরাসরি সিফাতকে কেবিনে নিয়ে যান। সেখানে কৌশলে সিফাতকে ঘুমের ওষুধ মেশানো পানি খেতে দেওয়া হয়। এরপর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তামিম ও নেহাল।
সিফাতের পেট কেটে বস্তায় পুরে চাঁদপুর নদীর মোহনায় ফেলে দেন তারা। হত্যার পর নেহাল গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলসিটিতে চলে যায়। সেখানে সে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
সেখান থেকে তামিম মাওয়া হয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় এসে সিফাতের মোবাইল থেকে তামিম তার (সিফাত) মার কাছে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। সিফাতের মা দুই দফায় তাকে ২২ হাজার টাকা দেন।
এসআই জহিরুল জানান, প্রথমে প্রযুক্তির সহায়তায় তামিমকে রাজধানীর কাটাসুরা এলাকা থেকে আটক করা হয়। এরপর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নেহালকে নলছিটি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
ইএস/টিএ