ঢাকা: রাজধানীর পল্টনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় সিলেট থেকে গ্রেফতার পাঁচ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) মধ্যে এক সদস্য দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি চার আসামির দুজনকে ফের তিনদিনের রিমান্ডে ও দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ পাঁচজনকে গত ১২ আগস্ট সাতদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ইন্সপেক্টর আব্দুল্লাহ আল নজরুল ৫ আসামিকে আদালতে হাজির করেন।
পাঁচ আসামির মধ্যে সানাউল ইসলাম সাদী স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ উর রহমান ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠান।
আসামি শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান ও রুবেল আহমেদের ফের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তাদের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এছাড়া আসামি আব্দুর রহিম জুয়েল ও সায়েম মির্জাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে একই আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৪ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় পুরানা পল্টন এলাকায় এ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে আইইডিতে (ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ব্যবহৃত ইলেকট্রিক টেপ, জিআই পাইপের কনটেইনার, সার্কিটের অংশ, তারের অংশ বিশেষ, লোহার তৈরি বিয়ারিং ও বল, নাইন ভোল্ট ব্যাটারির অংশ বিশেষ উদ্ধার করা হয়। পরে পল্টন মডেল থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১১ আগস্ট সিলেটের মিরাবাজার, টুকের বাজার ও দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন স্থান থেকে অপারেশন 'এলিগ্যান্ট বাইট' চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের (সিটিটিসি) একটি টিম। এ সময় তাদের কাছ থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, তাদের গ্রেফতারের পর সিটিটিসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আটকরা নব্য জেএমবির সুরা সদস্য শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে সিলেটের শাপলাবাগের একটি বাসায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণের আড়ালে সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলো। এদর মধ্যে শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান কফিশপে (বারিস্তা) কপি মেকার হিসেবে কাজ করে। ২০১৯ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে অনার্স সম্পন্ন করে। সে ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় সদস্য ছিলো। সে সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক এবং সামরিক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সিলেটের শাপলাবাগের বাসাটি ভাড়া নেয়।
সানাউল ইসলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র। রুবেল আহমেদ ২০১৬ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ব্লু বার্ড সিলেট শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়। সে সিলেটে টুকেরবাজারে সার, বীজ ও কিটনাশকের ব্যবসা করে। আব্দুর রহিম জুয়েল রেন্ট এ কারের ড্রাইভার হিসেবে কাজ করত। তার গাড়ি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করেছিলো। সায়েম মির্জা সিলেটের মদন মোহন কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
কেআই/ওএইচ/