ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মা-মেয়েকে মারধর: তদন্ত কমিটি করায় ব্যারিস্টার সুমনের ধন্যবাদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২০
মা-মেয়েকে মারধর: তদন্ত কমিটি করায় ব্যারিস্টার সুমনের ধন্যবাদ

ঢাকা: কক্সবাজারের চকরিয়ায় গরু চুরির অভিযোগে মা-মেয়েকে কোমরে রশি বেঁধে এলাকায় ঘোরানোর ঘটনায় অল্প সময়ে তদন্ত কমিটি করা, হাইকোর্টের নজরে আনা ও সোশ্যাল বিচার চাওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
 
সোমবার (২৪ আগস্ট) ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি এ ধন্যবাদ জানান।

এর আগে রোববার আরেক ভিডিওবার্তায় তিনি ওই ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। অন্যথায় তিনি বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনবেন বলেও জানান।
 
এর মধ্যে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শ্রাবস্তী রায় কমিটির প্রধান। এই কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- চকরিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও একজন হারবাং ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার।
 
এছাড়া চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার দেবের আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
 
এদিকে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেসমিন সুলতানা ও জামিউল হক ফয়সাল বিষয়টি হাইকোর্টের নজরেও এনেছেন।
 
এ পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ভিডিওতে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে গতকাল চকরিয়ার মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে ঘোরানোর ব্যাপারে আমরা বলেছিলাম তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আমরা আজ সকালে শুনতে পেয়েছি- আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাই সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগকে। হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ বলে দিয়েছেন যে, তারা ব্যাপারটি লক্ষ্য করে দেখছেন, যদি তদন্তে কোনো ধরনের গাফিলতি হয় তাহলে তারা অবশ্যই এটার মধ্যে ইন্টারফেয়ার করবেন।
 
‘আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে। যিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে এ মামলাটি নিয়েছেন। আমি জানি না এই মুহূর্তে চেয়ারম্যান সাহেবকে ধরা হয়েছে কিনা। ’
 
ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনকে। তদন্ত কমিটি করার জন্য। সবগুলো কমিটি মিলে প্রকৃত অর্থে এখানে কি হয়েছিল বা যাইহোক না কেন মা-মেয়ে যদি চুরি করেও থাকে, তাও এরকম রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে আসা যায় কিনা এবং এটার দায় দায়িত্ব কার ওপর বর্তায়, এটা কি স্থানীয় প্রশাসন উপর বর্তায় নাকি একমাত্র চেয়ারম্যানের ওপর বর্তায়। যাদের উপর বর্তাবে তাদের যেন তদন্তের মধ্য দিয়ে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়।
 
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ার মানুষ যখন একত্রিত হয়ে কোনো বিচার চায়, এই বিচার যে আসলে সম্ভব সোশ্যাল মিডিয়া প্রমাণ করেছে। একদিনের ব্যবধানে এতগুলো তদন্ত কমিটি, এতগুলো মানুষ কাজ করছে।
 
শনিবার রাতে কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাংয়ে গরু চুরির অভিযোগে মা ও মেয়েকে কোমরে রশি বেঁধে মারতে মারতে এলাকায় ঘুরিয়েছে স্থানীয় লোকজন। পরে সেখান থেকে তাদের হারবাং ইউনিয়ন পরিষদে এনে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এরকম একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
 
এ ঘটনায় গরুর মালিক চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. মাহবুবুল হক চকরিয়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় এ দুই নারী ও অজ্ঞাত অটোচালকসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলার আসামিরা হলেন, কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ ছুট্টু (২৭), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিরহাট এলাকার শহীদের কলোনির পারভীন আক্তার (৪০), ছেলে মো. এমরান (২১), মেয়ে সেলিনা আক্তার শেলি (২৮) ও রোজি আক্তার (২৩)।  প্রথমজন ছাড়া তিন নারী ও দুই পুরুষ একই পরিবারের সদস্য।  

এদিকে সোমবার চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার দেবের আদালত ওই মা ও মেয়ের জামিন মঞ্জুর করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২০
ইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।