কক্সবাজার: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যায় অভিযুক্ত কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে আদালতে আরও দুইটি হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে টেকনাফে ক্রসফায়ারে নিহত মুছা আকবরের স্ত্রী শাহেনা আকতার ও একইভাবে নিহত সাহাব উদ্দীনের বড়ভাই হাফেজ আহমদ বাদী হয়ে মামলা দুটির আবেদন করেন।
আদালত মামলা দুটি আমলে নিয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবীরা।
একটি মামলায় হোয়াইক্যং ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমানকে প্রধান ও প্রদীপ কুমার দাশকে দুই নম্বর এবং অন্য মামলায় এসআই দীপক বিশ্বাসকে প্রধান এবং প্রদীপকে তিন নম্বর আসামি করা হয়।
নিহত মুছা আকবরের মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাইঙ্গ্যা ঘোনার নিহত মুছা আকবরের বড়ভাই আলী আকবরের বাড়ি পুড়িয়ে দেয় টেকনাফ থানার একদল পুলিশ। এ ঘটনায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে তার পরিবার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২৮ মার্চ রাতে আবু মুছাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ক্রসফায়ার না দেওয়ার কথা বলে মুছার পরিবারের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু তিন লাখ দিতে সক্ষম হয় মুছার পরিবার। কিন্তু তিন লাখ টাকা নিয়েও ওই দিন ভোরে মুছা আকবরকে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী রিদওয়ান আলী বলেন, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়েছে আদালত এবং ওই ঘটনায় অন্য কোনো মামলা আছে কিনা তা তদন্ত করে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে নিহত সাহাব উদ্দীনের মামলা এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল দুপুরে টেকনাফে এসআই দীপক বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সাহাব উদ্দীনকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ক্রসফায়ার না দেওয়ার কথা বলে তার পরিবার থেকে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু পরিবার ৫০ হাজার টাকা দেয়। আরও চার লাখ ৫০ হাজার টাকা না দেওয়ায় ২০ এপ্রিল রাতে কাঞ্জরপাড়া ধানক্ষেতে ক্রসফায়ারের নামে সাহাব উদ্দীনকে গুলি হত্যা করা হয়।
এই মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম জানান, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়ে এ ঘটনায় অন্য কোনো মামলা আছে কিনা তা আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে মেরিন ড্রাইভ সড়কে চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ওসি প্রদীপসহ ১৩ আসামি কারাগারে রয়েছেন। এরপর থেকে ওসি প্রদীপসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করছেন ভুক্তভোগীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২০
এসবি/এএটি