ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

২ সম্পাদকসহ ঢাবির সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০
২ সম্পাদকসহ ঢাবির সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা মোর্শেদ হাসান খান

ঢাকা: 'জ্যোতির্ময় জিয়া' শিরোনামে কলাম লিখে চাকরিচ্যুত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ কথা লেখায় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট বুধবার (০৯ সেপ্টেম্বর) তাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্তের অনুমোদন দিয়েছে।

এবার চাকরিচ্যুত সেই শিক্ষক ও কলাম প্রকাশকারী ২টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমানের আদালতে মামলাটি করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

মামলায় দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, যায়যায়দিন পত্রিকার সম্পাদক কাজী রুকন উদ্দিন আহমেদ ও ঢাবি অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে আসামি করা হয়েছে।  

বিচারক বাদীর জবানবন্দি দেওয়ার পর আদেশের জন্য রেখেছিলেন। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) আদালত অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী এজেডইউ প্রিন্স বাংলানিউজকে বলেন, 'আসামিদের বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ১২৪(ক) ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কাজের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামি মোর্শেদ হাসান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করতে এই লেখাটি লেখেন। আর দু'জন সম্পাদক তাদের পত্রিকায় সেই লেখা প্রকাশ করে এই কাজে সহযোগিতা করেছেন। '  

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩০ মে মামলার আসামি অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় ‘স্মৃতিময় জিয়া’ শিরোনামে ও ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে নিবন্ধ ছাপেন।  

২০১৮ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রকাশিত ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ নিবন্ধে অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান লেখেন, 'আওয়ামী নেতাদের বেশিরভাগই স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তাদের পরিবার-পরিজনসহ ভারতে চলে গেলেন এ দেশবাসীকে মৃত্যুফাঁদে ফেলে দিয়ে নেতৃত্বহীন অবস্থায়। যাকে ঘিরে এ দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখত সেই শেখ মুজিবুর রহমানও। জাতির এ সংকটকালীন মুহূর্তে ত্রাতারূপে আবির্ভূত হন তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান। দেশপ্রেমের মহানমন্ত্রে উজ্জীবিত এই টগবগে যুবকের কণ্ঠে ২৬ মার্চ রাতে বজ্রের মতো গর্জে ওঠে স্বাধীনতার ঘোষণা। স্বাধীনতার ডাক এসেছিল শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর তার আগে নয়। আমার জানা মতে, তিনি কোনো স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। '

নিবন্ধের আরেক জায়গায় স্বাধীনতার পরের বর্ণনা দিতে গিয়ে মোর্শেদ হাসান লেখেন, 'দেশবাসী দেখলো শেখ মুজিব একদলীয় বাকশালী শাসনব্যবস্থা চালু করে নিজেই যেন দাঁড়িয়ে গেলেন নিজের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে। ১৯৭২ থেকে ৭৫-এর ১৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত দেশে বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। '

একইভাবে ২০১৬ সালের ৩০ মে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় ‘স্মৃতিময় জিয়া’ শিরোনামে এক লেখায়ও অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান একই ধরনের বক্তব্য দেন।

তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, ইতিহাস বিকৃতি, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আসামিরা এরূপ লেখা প্রকাশ ও প্রচার করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০
কেআই/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।