ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

গ্রাহকের অজ্ঞাতে কল রেকর্ড সংগ্রহ বন্ধ হওয়া উচিত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
গ্রাহকের অজ্ঞাতে কল রেকর্ড সংগ্রহ বন্ধ হওয়া উচিত হাইকোর্ট, ফাইল ফটো

ঢাকা: আনুষ্ঠানিক লিখিত চাহিদা ছাড়াও গ্রাহককে না জানিয়ে সরকারি-বেসরকারি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি থেকে কললিস্ট বা কল রেকর্ড সংগ্রহ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকের্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ অভিমত দিয়েছেন।

আদালত বলেছেন, আমরা ইদানিং লক্ষ্য করছি যে, অডিও-ভিডিও কথোপকথন সংগ্রহ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করছে। ওই কথোপকথনের অডিও-ভিডিও রেকর্ড বিভিন্ন উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে। আদালত বলেন, আমরা এটা ভুলে যেতে পারি না যে, সংবিধানের ৪৪ নম্বর অনুচ্ছেদে একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। তাই এটা রক্ষা করা ফোন কোম্পানি ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দায়িত্ব।

নেত্রকোনার শিশু সৈকত হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামির আবেদনের ওপর হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ কথা বলেছেন আদালত।

গত বছর ২৮ আগস্ট দেওয়া আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত হয়।

রায়ে বলা হয়েছে, কোনো গ্রাহকের ফোন কললিস্ট ও কথোপকথনের রেকর্ড নিতে হলে আইন অনুযায়ী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সংস্থা/অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে হবে। সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ হাতে গোনা কয়েকটি আইন ছাড়া বিশেষ কোনো আইনে ডিজিটাল ডকুমেন্টকে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারের কোনো আইন নেই।

রায়ে বলা হয়, সন্ত্রাসীরা তাদের কথাবার্তার অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে দিতে ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপি ব্যবহার করছে। সুতরাং এখন সময়ের দাবি, ডিজিটাল ডকুমেন্টকে সাক্ষ্য-প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করতে সাক্ষ্য আইন সংশোধন হওয়া প্রয়োজন।

রায়ে আরও বলা হয়, প্রতিবেশী দেশ ভারত ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে আইন সংশোধন করে নিয়েছে।

এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় সৈকতকে (৭) হত্যার ঘটনায় তার বাবা মো. সিদ্দিকুর রহমান নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানায় ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ৩১ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয়। এরপর বিচার শেষে ২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ছাত্র অলি আহম্মদকে মৃত্যুদণ্ড এবং সবুজ মিয়া ও তাপস সাহাকে যাবজ্জীবন দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪। মামলার আরেক আসামি আনিছ মিয়া শিশু হওয়ায় তাকে ১০ বছরের সাজা দেন একই আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করে এবং আইনানুযায়ী শিশুর অপরাধের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হতে পারে কিনা না এ নিয়ে আইনগত প্রশ্ন তুলে রায় বাতিল চেয়ে পৃথক আবেদন করা হয়। এ অবস্থায় তিনজন বিচারপতিকে নিয়ে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়। এ আদালত ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট রায় দেন। রায়ে অলি আহম্মদ ও সবুজ মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
ইএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।