ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

বলাৎকারকে ধর্ষণ গণ্য করে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি চেয়ে নোটিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
বলাৎকারকে ধর্ষণ গণ্য করে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি চেয়ে নোটিশ

ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষকের কর্তৃক ছাত্র ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনার প্রেক্ষিতে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ ধারায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে ছাত্রদের বলাৎকারকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করে ধর্ষণের মতোই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে আলিয়া মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসাগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নারী শিক্ষক নিয়োগ করে বিশেষত শিশুদের নারী শিক্ষক দ্বারা পাঠদানের ব্যবস্থা করতে নোটিশে বলা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সচিব, শিক্ষা সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয় সচিব, আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার।

নোটিশ পাঠানোর পর ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের  মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষক কর্তৃক ক্রমবর্ধমান ছাত্র ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, দেশে দুই ধরনের মাদ্রাসা শিক্ষা পদ্ধতি যেমন আলিয়া মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। এসব মাদ্রাসাগুলোতে প্রায় কোটির কাছাকাছি ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে। এই  মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থীরা পুরুষ শিক্ষকদের অধীনে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই মাদ্রাসাগুলোতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের কারণে এসব কোমলমতি ছাত্ররা ধর্ষণসহ বিভিন্ন যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাদের শিক্ষক দ্বারা। এসব যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের ফলে অনেক ছাত্ররা মৃত্যুর মুখেও ঢলে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এসব ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

‘আবার প্রচলিত আইনে পুরুষের সাথে পুরুষের জোরপূর্বক যৌন সঙ্গমকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। ফলে এ ধরনের যৌন সঙ্গমের শাস্তি অনেক কম থাকায় মাদ্রাসার শিক্ষকরা সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন। ’

তাই লিগ্যাল নোটিশে দন্ড বিধির ৩৭৫ ধারায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ ধারায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে পুরুষ কর্তৃক ছাত্রদের বলাৎকারকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করে এ ধরনের অপরাধে ধর্ষণের মতোই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়।

একই সঙ্গে আলিয়া মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসাগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নারী শিক্ষক নিয়োগ করে বিশেষত শিশুদের নারী শিক্ষক দ্বারা পাঠদানের ব্যবস্থা নিতে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান ব্যারিস্টার পল্লব।

তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসা প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, কওমি মাদ্রাসাগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় বিধিবিধান প্রণয়ন করার জন্য নোটিশে অনুরোধ করা হয়েছে।

৫ দিনের মধ্যে এসব বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।