ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

একজনের সার্টিফিকেটে আরেকজন চিকিৎসক!

বদরুল আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২০
একজনের সার্টিফিকেটে আরেকজন চিকিৎসক! নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত মাসুদ রানা (ডান থেকে দ্বিতীয়), ছবি: বাংলানিউজ

হবিগঞ্জ: চিকিৎসকের নাম মাসুদ করিম। এমবিবিএস সম্পন্ন করেছেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে।

কিন্তু তার সার্টিফিকেট ব্যবহার করে রোগী দেখছেন মাসুদ রানা। ফি নিচ্ছিলেন ৫০০ টাকা করে। শুধু মাসুদ রানা থেকে চিকিৎসক মাসুদ করিম হতে তৈরি করেছেন একটি জাল জাতীয় পরিচয়পত্রও।

অবশেষে প্রতারক মাসুদ রানাকে এক বছরের কারাদণ্ড দিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তার কাছ থেকে মাসুদ করিম নামে এমবিবিএস পাসের সার্টিফিকেটের ফটোকপি, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ভিজিটিং কার্ড জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে তাকে হবিগঞ্জ শহরের মুন জেনারেল হাসপাতাল থেকে আটক করা হয়। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামছুদ্দিন মো. রেজা তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। তিনি ফেনী জেলার বাসিন্দা। বাবার নাম আব্দুল হান্নান।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার হবিগঞ্জ শহরের মুন জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়। তখন মাসুদ রানা নিজেকে ডা. মাসুদ করিম বলে দাবি করেন। কিন্তু পরে সার্টিফিকেটের প্রকৃত মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, মাসুদ রানা একজন প্রতারক। এরপর তিনি তার দোষ স্বীকার করেছেন। তাকে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মুন জেনারেল হাসপাতালের চেয়ারম্যান সামছুল আলম সাজু বাংলানিউজকে জানান, মাসুদ রানা নিজেকে ডা. মাসুদ করিম প্রচারের মাধ্যমে প্রায় দুই মাস ধরে ৫০০ টাকা ফিতে রোগী দেখছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী রোগীপ্রতি হাসপাতালকে দিতেন ১০০ টাকা।

চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার সময় যাচাই-বাছাই করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাসুদ রানা নিজেকে ডা. মাসুদ করিম প্রমাণ করতে একটি জাল জাতীয় পরিচয়পত্রও বানিয়ে নিয়েছেন। সেজন্য আমরা বুঝতে পারিনি।

এদিকে, ভুয়া চিকিৎসককে শাস্তির আওতায় আনলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি জেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশ্ন এড়িয়ে যান।  

মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান কল রিসিভ করেননি। তবে জেলা প্রশাসনের আরেকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে শুধু তাৎক্ষণিকভাবে যিনি অপরাধী তাকেই শাস্তি দেওয়া হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শাস্তির আওতায় আনতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন বলেও তিনি জানিয়েছেন।  

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মুন জেনারেল হাসপাতালের কোনো রেজিস্ট্রেশনই নেই। এটি অবৈধ প্রতিষ্ঠান। এ হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া উচিত। তবে সেটা প্রশাসনের মাধ্যমেই করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২০
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।