ঢাকা: করোনা ভাইরাসের মধ্যে বিদেশ থেকে ফেরত এসে কোয়ারেন্টিন শেষে গ্রেফতার হয়ে জামিনে থাকা ২১৯ জনকে ৫৪ ধারার কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে হাজির এবং ঢাকার সিএমএম এর ব্যাখ্যার পর তাদের বিরুদ্ধে ৫৪ ধারার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে করা আবেদনও বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) নিষ্পত্তি করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, মধ্যেপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ২১৯ জন প্রবাসী দেশে ফেরত আসার পর তাদের কোয়রেন্টিনে পাঠানো হয়। তারা সেসব দেশে বিভিন্ন অপরাধে সাজাপ্রপ্ত ছিলেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দেশে আসার পর তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হলে তুরাগ থানায় জিডি করে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য শলা-পরামর্শ করছিলেন।
৪ জুলাই তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এর মধ্যে বাহরাইন থেকে আসা চাঁদপুরের শাহিন আলমও রয়েছেন। অবশ্য ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি জামিন পান। এরপর তার বিরুদ্ধে ৫৪ ধারা চলমান কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি।
৮ অক্টোবর এ আবেদনের শুনানি নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ঢাকার সিএমএম এর কাছেও ব্যাখ্যা চেয়েছেন উচ্চ আদালত।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হাইকোর্টে হাজির হন তুরাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিউল্লাহ।
আদালতে দাখিল করা তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তারা বিদেশে গিয়ে কোন কোন অপরাধ সংঘটনের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কেউ ৫ বছর থেকে ২০ বছর পর্যন্ত দণ্ডিত।
অপরদিকে, সিএমএমএমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
আদালতে জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, ৫৪ ধারায় কাউকে ১৫ দিনের বেশি আটক রাখারও সুযোগ নেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে আপিল বিভাগের রায়ের নির্দেশনা কেউ বাস্তবায়ন করছেন না। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, করোনাকালে ২১৯ জন প্রবাসীর তথ্য বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছে তদন্ত কর্মকর্তা। সেটা আমরা দেখেছি। আর ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটির কার্যক্রম শেষ করেছেন। এ কারণে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেওয়া হলো।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২০
ইএস/ওএইচ/