ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জগলুল ওয়াহিদের সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ থাকবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২০
জগলুল ওয়াহিদের সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ থাকবে

ঢাকা: সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
একইসঙ্গে তার গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কের বাড়িতে থাকা জিনিসপত্র কোনো পক্ষ বাইরে নিতে পারবে না বলেও আদেশ দেওয়া হয়েছে।


 
সোমবার (৯ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান।
 
মনজিল মোরসেদ জানান, আদালত আদেশ দিয়েছেন, প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে, ওই বাড়িতে থাকা জিনিসপত্র কোনো পক্ষ বাইরে নিতে পারবে না, জগলুল ওয়াহিদের ডেথ সার্টিফিকেটের কপি তিন দিনের মধ্যে মেয়েদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
 
‘জগলুল ওয়াহিদের মৃত্যুর পরে ব্যাংকে লেনদেন ও বর্তমান হিসাব অ্যাফিডেভিট করে আঞ্জু কাপুর আদালতে দাখিল করবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ম্যানেজারকে হিসাবের তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’
 
‘আঞ্জু কাপুর বিদেশি নাগরিক হিসেবে অ্যাফিডেভিট দিতে পারেন কিনা ও সম্পত্তির মালিক হতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে তাকে অ্যাফিডেভিট দিতে হবে। সম্পত্তি উইল করে দেওয়া হয়েছে-আঞ্জু কাপুরের এমন অ্যাফিডেভিট বিষয়ে দুই মেয়ের পক্ষে আইনজীবীদের অ্যাফিডেভিট দিয়ে জবাব দিতে হবে। গুলশান থানার ওসিকে নিরাপত্তা অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে’ বলে জানান মনজিল মোরসেদ।  

এরআগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে হাইকোর্ট ২৬ অক্টোবর বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন।
 
আদেশে অনতিবিলম্বে তাদের বাবা মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কের বাসায় প্রবেশ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে রাতেই ওই বাড়িতে তাদের প্রবেশ ও অবস্থান নিশ্চিত করার পর রাতেই গুলশান থানার ওসিকে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসারকে টেলিফোনে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।  
 
এছাড়া ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ওই বাসায় দুই বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গুলশান থানার ওসিসহ ৩ নভেম্বর দুই বোন এবং ওই বাড়িতে থাকা আঞ্জু কাপুরকে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়।  
 
এ আদেশের পর ওইদিন রাতেই দুই বোন মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশশারা মোস্তফাকে বাসায় উঠিয়ে দিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গুলশান থানা পুলিশ এবং বাড়ির সামনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন।
 
পরে আদেশ অনুসারে ৩ নভেম্বর দুই মেয়ে ও দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুর গুলশান থানার ওসিকে নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হন। ওইদিন আদালত ওই বাড়ির দাবির পক্ষে প্রয়োজনীয় নথিপত্র আদালতে দাখিল করতে পক্ষদের নির্দেশ দেন।
 
মনজিল মোরসেদ বলেন, আঞ্জু কাপুর সম্পত্তি উইলের কথা বলেছেন। আমরা ঘটনার ফ্যাক্ট তুলে ধরেছি। ৩ ডিসেম্বর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আদালত।
 
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে বাড়িটি প্রায় ১০ কাঠা জমির ওপর। গৃহকর্তার মৃত্যুর পর মালিকানা নিয়ে বিরোধে তার দুই মেয়ে অবস্থান নেন বাড়ির সামনে। ওই দুই বোনের দাবি, বাড়ির দখল বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের হাতে। তিনি কিছুতেই ওই বাড়িতে তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না।

গত ১০ অক্টোবর মোস্তফা জগলুলের মৃত্যু হয়। মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ পেশায় পাইলট ছিলেন। ভাইবোনদের মধ্যে শুধু সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশে নেই। দু’দিন ধরে বাড়ির সামনে অবস্থান নেন মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা। তারা বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
 
মুশফিকা গণমাধ্যমকে বলেন, ১৯৮৪ সালে তার মাকে নিয়ে বাবা গুলশানের এই বাসাতেই সংসার শুরু করেছিলেন। তাদের জন্ম এই বাড়িতে। ২০০৫ সালে তাদের মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়। পরে আঞ্জু কাপুর নামে এক ভারতীয়কে তাদের বাবা বিয়ে করেন। তিনি একাই এখন এই বাড়ির ভোগদখল করছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
ইএস/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।