ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রায়হান হত্যা: অভিযোগকারী সাইদুলের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২০
রায়হান হত্যা: অভিযোগকারী সাইদুলের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

সিলেট: সিলেটে রায়হান উদ্দিন (৩০) হত্যার ঘটনায় সাইদুল শেখ নামে আরেক আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।  

রোববার (১৫ নভেম্বর) সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

এর আগে রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন সাইদুল শেখকে আদালতে তাকে হাজির করে ৭ দিনের আবেদন রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।  

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

পিবিআই সূত্র জানায়, রিমান্ডপ্রাপ্ত সাইদুল শেখ নিহত রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলেন। এ কারণে তাকে প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।  

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর সাইদুল শেখকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পিবিআই।  

গত ১১ অক্টোবর ভোর রাতে রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। পরে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল ৭টা ৫০মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।  

রায়হান ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হলেও নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ ছিল পুলিশ ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরিবারের অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্ত দল ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর সত্যতা পেয়ে জড়িত থাকায় ইনচার্জ আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন। বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন। ঘটনার পর অন্য ছয়জন পুলিশ হেফাজতে থাকলেও আকবর পলাতক ছিলেন।  

গত ১০ নভেম্বর সকালে খাসিয়াদের সহযোগিতায় বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেনকে কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের হাতে তুলে দেয় ভারতীয় খাসিয়ারা। খবর পেয়ে পোশাকে-সাদা পোশাকে পুলিশ ঘটনাস্থল ডোনা সীমান্ত এলাকা পৌঁছলে জনতা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এরপর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আকবরকে সিলেটে আনা হলে সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ।  

অথচ কেউ আকবরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কি না? জানতে চাইলে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, কেউ হস্তান্তর করেনি। অবশ্য আমরা পুলিশের সব কাজে জনগণের সহযোগিতা নিই। আকবরকে গ্রেফতার করতে আমাদের কিছু বন্ধু সহযোগিতা করেছেন।  

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ভারতের খাসিয়ারা আকবরকে আটক করেছে, এমন প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ভিডিও করা হয়নি। ওই ভিডিও কে, কোথায় করেছে, তা আমাদের জানা নেই। এ ধরনের কিছু দেখিনি। তবে তাকে জেলা পুলিশের কানাইঘাট থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে।  

সংবাদ সম্মেলন পরবর্তীতে রাত পৌনে ৮টার দিকে আকবরকে পিবিআই কাছে হস্তান্তর করেছে। গত মঙ্গলবার আকবরকে আদালতে হাজির করা হলে তার ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। এখন তিনি পিবিআই হেফাজতে রিমান্ডে আছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২০
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।