ঢাকা: প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় কারা অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজনস) বজলুর রশীদের জামিনের মেয়াদ আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেড়েছে।
রোববার (২২ নভেম্বর) ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন।
গত ২৯ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনের আদালত থেকে জামিন পান ডিআইজি বজলুর রশিদ।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে জামিন নেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগে দুদক তার জামিন বাতিলের আবেদন করে।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, তিনি কোনো তথ্য গোপন করেননি। তার স্থায়ী জামিনের আবেদন করছি।
তখন বিচারক বলেন, মামলাটি এই আদালতের নয়। আমি আজ দায়িত্বে আছি মাত্র। তাই নিয়মিত আদালতে এ বিষয়ে শুনানি করবেন।
তখন দুদক কৌশলী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, নিয়মিত আদালতের বিচারক সাত দিনের প্রশিক্ষণে আছেন। জরুরি ভিত্তিতে শুনানি করা দরকার।
এরপর আদালত ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বজলুর রশীদের জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আদেশ দেন। ওইদিন জামিন বাতিলের বিষয়ে শুনানি হবে। একই দিন এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য করেন আদালত।
গত ২২ অক্টোবর একই আদালত এই মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২২ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়।
ওইদিনই আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য ২৯ অক্টোবর দিন ধার্য করেছিলেন।
গত ২৬ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দীন বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ মামলাটি এই আাদালতে বদলির আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বজলুর রশীদ রূপায়ণ হাউজিং স্টেট থেকে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী রোডের ৫৫/১ (পুরাতন) ৫৬/৫৭ (নতুন) নির্মাণাধীন স্বপ্ন নিলয় প্রকল্পের ২৯৮১ বর্গফুট আয়তনের অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন। অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য বাবদ তিন কোটি ৮ লাখ টাকা পরিশোধও করেছেন। এই অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় বাবদ বজলুর রশীদ যে টাকা পরিশোধ করেছেন, এর পক্ষে কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি।
এমনকী তিনি অ্যাপার্টমেন্টের ক্রয় সংক্রান্ত কোনো তথ্য তার আয়কর নথিতে দেখাননি। পরিশোধিত ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা জ্ঞাত আয় উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। সবমিলিয়ে তার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুদক আইন ২৭ (১) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
গত বছর ২০ অক্টোবর বেলা ১১টা থেকে বজলুর রশীদ ও তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দুদক। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানোর অভিযোগে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানেই তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি দুদকের নজরে আসে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুরে দুদক পরিচালক মো. ইউসুফের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন ও সালাউদ্দিন আহমেদ। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় আদালতে হাজির তরা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২০
কেআই/এএ