ঢাকা: চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজধানীর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমান এই আদেশ দেন।
একই আদালতে গত ১৭ নভেম্বর মামলাটি দায়ের করেন ব্যবসায়ী মো. আব্দুর রহিম। কোতয়ালী থানার ওসি মিজানুর রহমান ছাড়াও এসআই আনিসুল ইসলাম, এএসআই খায়রুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম এবং সোর্স দেলোয়ার হোসেনসহ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬৬/১৬৭/১৭০/৩৮৫/৩৮৯/৩৪ ধারায় চাঁদাবাজিসহ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে ৩ ডিসেম্বর মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছিলেন। পরে একদফা পিছিয়ে আদেশের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, বাদী আব্দুর রহিম গত ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় কাজ শেষে চরকালিগঞ্জ জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে বাসায় ফিরছিলেন। রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া ব্রিজের উপর এলে অজ্ঞাতনামা তিনজন লোক তার গতিরোধ করেন। তারা নিজেদের ঢাকা জেলার ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। রহিমের নামে ডিবিতে মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে জানান।
পরে রহিমকে একটি দোকানে নিয়ে তল্লাশি করেন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা। তবে তার কাছ থেকে কিছু উদ্ধার করতে পারেননি তারা। দোকানে উপস্থিত লোকজন রহিমকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তারপরও তারা রহিমকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে যান। ওই অজ্ঞাতনামা তিনজন রহিমকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে বাবুবাজার ব্রিজের কাছে নিয়ে যান। সেখানে এসআই আনিসুল ইসলাম, এএসআই খায়রুল ইসলাম ও সোর্স দেলোয়ার উপস্থিত ছিলেন। এ তিন আসামি তাদের কাছ থেকে ৬৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট বের করে বলেন, এগুলো রহিমের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
এসআই আনিসুল ইসলাম বলেন, যদি ফাঁসতে না চাস তাহলে দুই লাখ টাকা জোগাড় কর, না হলে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেব। এ থেকে বাঁচার জন্য রহিম তার কাছে থাকা এক ভরি স্বর্ণের চেইন, নগদ ১৩ হাজার টাকা তুলে দেন। দাবিকৃত দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় তারা রহিমকে রাত সোয়া ৯টার দিকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহিম তাদের ৫০ হাজার টাকা দেন। রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ওসি মিজানুর রহমান রহিমকে ডেকে নেন। তাকে বলেন, তোকে বাঁচিয়ে দিলাম। ছোট মামলা দিলাম, দুই একদিনের মধ্যে বের হয়ে আসতে পারবি।
অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, দাবিকৃত দুই লাখ টাকা দিতে না পারায় তার বিরুদ্ধে ১০ পিস ইয়াবার মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। ১৭ দিন পর জেল থেকে ৩০ অক্টোবর মুক্তি পান রহিম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২০
কেআই/এমজেএফ