সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার রায় বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি)।
গত ২৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষে আদালতের কাঠগড়ায় থাকা ৩৪ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবীর।
মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরাবাসীর দৃষ্টি এখন আদালতের দিকে।
মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জন আসামির মধ্যে ৩৪ জন কারাগারে রয়েছেন। অপর ১৬ জনের মধ্যে একজন অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া পলাতক রয়েছেন ১৫ জন।
কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আশরাফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, আব্দুর রকিব মোল্যা, আক্তারুল ইসলাম, আব্দুল মজিদ, হাসান আলী, ময়না, আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদ, আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, ট্রলি শহীদুল, মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোলা, আব্দুল গফফার গাজী, রিঙ্কু, অ্যাড. আব্দুস সামাদ, টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন।
এছাড়া পলাতক রয়েছেন- আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রব, সঞ্জু, নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কণক ও মাহাফুজুর রহমান।
জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার নির্যাতিতা স্ত্রীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দেখে যশোরে ফেরার পথে জেলা বিএনপির সভাপতি ও তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নির্দেশে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা যাত্রীবাহী একটি বাস রাস্তার উপরে আড় করে দিয়ে তার গাড়িবহরে হামলা চালায়।
এসময় গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। হামলায় বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবন ও বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন।
কলারোয়ার তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ মোসলেম উদ্দিন এ ঘটনায় কলারোয়া থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার জমা দেন। থানা মামলাটি রেকর্ড না করায় একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর তিনি সাতক্ষীরার আমলি আদালতে মামলাটি করেন। এ মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এসময় তদন্ত করে পুলিশ তৎকালীন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়।
মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে কোয়াশমেন্ট করেন আসামিরা। এরপর চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার কার্য শেষ করার জন্য সাতক্ষীরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট আদালতকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর মামলাটির বিচার কার্য নতুন করে শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২১
আরএ