ঢাকা: সাবেক স্বামীর অপহরণ মামলায় বরগুনার পাথরঘাটার ফাতেমা বেগমের বর্তমান স্বামী শাহ আলমকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া ২০ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে শাহ আলমের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট।
তবে, তার বিরুদ্ধে যৌতুকের এক মামলায় তিন বছরের দণ্ড থাকায় তিনি জামিন পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে শাহ আলমের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.সারওয়ার হোসেন বাপ্পি।
আইনজীবীরা জানান, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার ফাতেমা বেগম ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তার স্বামী জাকির হোসেনকে তালাক দেন। তালাকের পর ২০১২ সালের ৫ মে অপহরণের অভিযোগ এনে জাকির হোসেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শাহ আলমসহ আটজনের বিরুদ্ধে পাথরঘাটা থানায় মামলা করেন।
এ মামলায় ফাতেমা বরগুনার পাথরঘাটার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারার জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমাকে শাহ আলম অপহরণ করেননি। শাহ আলমকে আমি মাসখানেক আগে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি। ২০০৭ সালে জাকিরের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু জাকিরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শাহ আলমকে বিয়ে করি। তবে দ্বিতীয় বিয়ের ৪/৫ মাস আগে জাকিরকে তালাক দেই। তিনি এখন আর আমার স্বামী নন। আমাকে কেউ অপহরণ করেনি। ’
তবে বিচার শেষে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান আসামি শাহ আলমকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়ে রায় দেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ে বলা হয়, ‘ফাতেমা অপহরণ হননি এবং প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন বলে ২২ ধারায় যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় মনে হচ্ছে, ডিভোর্স না দিয়েই তিনি শাহ আলমের কাছে চলে গেছেন। আইনের চোখে এটা অপরাধ মনে হওয়ায় আসামিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ’
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন শাহ আলম। সে আবেদনের সঙ্গে জামিন আবেদনও করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিয়ের পর ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম সন্তান এবং ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হন শাহ আলম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১
ইএস/এফএম