ঢাকা, বুধবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩১, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মাদরাসার সেই শিক্ষার্থীর পড়ালেখার খেয়াল রাখতে বললেন হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
মাদরাসার সেই শিক্ষার্থীর পড়ালেখার খেয়াল রাখতে বললেন হাইকোর্ট ...

ঢাকা: হাটহাজারীর মারকাজুল কোরআন ইসলামি অ্যাকাডেমি মাদরাসায় শিক্ষকের বেধড়ক মারধরের শিকার ওই শিশু শিক্ষার্থীর লেখাপড়া যেন বন্ধ না হয়ে যায় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলেছেন হাইকোর্ট।

এ ঘটনায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার প্রতিবেদন দেওয়ার পর রোববার (১৪ মার্চ) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ এমন কথা বলেন।

আদালত বলেন, মাদরাসায় নির্যাতন, বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, এমনকি যৌন নির্যাতনের ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। এ বিষয়ে অনেক আগে থেকে আদালতের নির্দেশনা আছে। নির্দেশনাগুলো সব জায়গায় যাতে কার্যকর হয়। কমিটি গঠনসহ আদালতের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়নে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ যাতে সচেষ্ট থাকে।

শিশুটির লেখাপড়া ভয়ভীতির কারণে যেন বন্ধ হয়ে না যায়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলেন আদালত।
জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিশুটিকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া, শিশুটিকে মানসিকভাবে প্রফুল্ল রাখতে চকলেট, কেক, গল্পের বইসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা উপহার দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তনাধীন। এছাড়া, ঘটনার পরদিন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে।

ঘটনার পরপরই শিশুটির গ্রামের বাড়িতে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে বিষয়টি নজরে আনার পর বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। বিষয়টি নজরে আনেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

সে অনুসারে প্রতিবেদন জমা দেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।

মারকাজুল কোরআন ইসলামি অ্যাকাডেমি মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাত বছর বয়সী শিশুটিকে মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বিকেলে দেখতে যান মা পারভিন আক্তার ও বাবা মোহাম্মদ জয়নাল।

কিন্তু ফেরার সময় ছোট্ট শিশুটি মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে। এক পর্যায়ে শিশুটি মা-বাবার পিছু পিছু মাদরাসার মূল ফটকের বাইরে চলে আসলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মাদরাসার শিক্ষক মো. ইয়াহিয়া।

মূল ফটকের বাইরে যাওয়ায় শিশুটিকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন তিনি। এ সময় শিশুটির বাঁচার আকুতিও শোনেননি ওই শিক্ষক। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাত থেকে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশু নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

রাতে হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুকে উদ্ধার করেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে শিশুটির বাবা-মায়ের লিখিত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিক্ষককে তখন ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

ওই ঘটনায় শিশুটির পরিবার থানায় মামলা করার পর অভিযুক্ত মারকাজুল কোরআন ইসলামি অ্যাকাডেমি মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়েছে হাটহাজারী থানা পুলিশ।

পরদিন বুধবার (১০ মার্চ) বিকেলে হাটহাজারী থানায় এ মামলা দায়ের করা হয় বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হারুনুর রশিদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
ইএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।