ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ সফর ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ফাহাদ হত্যা: ফের শুরু হচ্ছে বিচার কার্যক্রম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৮ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২১
ফাহাদ হত্যা: ফের শুরু হচ্ছে বিচার কার্যক্রম

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় প্রায় তিন মাস পর ফের বিচারকাজ শুরু হচ্ছে। করোনায় আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে সাফাই সাক্ষ্য পর্যায়ে এই মামলাটির বিচারকাজ থেমে আছে।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশে রোববার (২০ জুন) থেকে শুরু হয়েছে নিম্ন আদালতের স্বাভাবিক কর্যক্রম। প্রথম দিনেই আবরার হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরুর তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৭ ও ২৮ জুন থমকে থাকা সাফাই সাক্ষীর দিন ধার্য করেছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।

এই মামলায় আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ এই তথ্য জানান।

সবশেষ গত ১৮ এপ্রিল একই আদালতে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে এই মামলার সাফাই সাক্ষ্যের দিন ধার্য ছিল। ওই অবস্থায় ছুটিতে মামলার বিচারকাজ স্থগিত হয়ে যায়।

গত ১৪ মার্চ মামলার ২৫ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা ২২ আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনে এই দাবি করেন তারা।  
অপর তিন আসামি পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারেননি।

২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর চার্জশিটভুক্ত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়। এরপর ৫ অক্টোবর আবরারের বাবা বরকতউল্লাহর জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই মামলার সাক্ষ্য শুরু হয়।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ। ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা বরকতউল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন।

গত বছর ১৩ নভেম্বর মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন গোয়েন্দা পু‌লিশের (ডি‌বি) লালবাগ জোনাল টিমের প‌রিদর্শক মো. ওয়া‌হিদুজ্জামান।

মামলার তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেফতাররা হলেন—বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং এস এম মাহমুদ সেতু। পরে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।

গ্রেফতারদের ম‌ধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু ছাড়া বাকি সবাই এজাহারভুক্ত আসামি।

মামলার আট আসামি আদালতে স্বীকা‌রো‌ক্তিমূলক জবানব‌ন্দি দেন। তারা হলেন—ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।

মোর্শেদ অমত্য ইসলাম নামে পলাতক এক আসা‌মি পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জা‌মিন আবেদন করেন। আদালত জা‌মিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

তাই এখন পলাতক রয়েছেন আর তিন আসা‌মি। তারা হলেন—মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রা‌ফিদের নাম এজাহারে ছিল না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২১
কেআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।