ঢাকা: তালাক নোটিশে নারীর প্রতি ‘অবমাননাকর, অমানবিক ও অযৌক্তিক’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (২৭ জুন) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
রুলে নিকাহ রেজিস্ট্রারের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তালাক নোটিশে অবমাননাকর, অমানবিক ও অযৌক্তিক এবং অবৈধ শব্দের ব্যবহার কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব ও নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল নোমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন রাজধানীর বড় মগবাজার এলাকার বাসিন্দা রাখী কে জামান। যিনি বর্তমানে কানাডার উইন্ডসর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত।
আবেদনে বলা হয়,২০১৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে রাকিব মুক্তাদির জোয়ারদারের সাথে বিয়ে হয় রাখী কে জামানের। পরে ২০১৭ সালের অক্টোবরে রাখীকে তালাক নোটিশ পাঠান রাকিব মুক্তাদির জোয়ারদার।
ওই নোটিশের একাংশে বলা হয়, ‘স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য–যাহা শরিয়তের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাহার উক্ত চাল-চলন পরিবর্তন করার জন্য আমি নিজেই বহুবার চেষ্টা করিয়াছি। কিন্তু অদ্যবধি তাহার কোনো পরিবর্তন সাধিত হয় নাই। ’
এ ধরনের শব্দ অবমাননাকর, অমানবিক, অযৌক্তিক ও অবৈধ উল্লেখ করে গত ২ জুন হাইকোর্টে রিট করেন রাখী।
পরে আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, নোটিশে এ ধরনের শব্দের ব্যবহার একজন নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর । পরবর্তীতে বিয়ে করার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো নানা ধরনের জটিলতার মুখে পড়তে হয়।
রিটে বলা হয়, মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ এবং মুসলিম বিয়ে এবং তালাক (নিবন্ধন) আইন, ১৯৭৪ অনুযায়ী এ ধরনের শব্দের ব্যবহার স্পষ্টভাবে নারীর মানবাধিকার ও তার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে। একই সঙ্গে সংবিধানের ২৭, ২৮ এবং ৩২ অনুচ্ছেদেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
ইএস/এমজেএফ