ঢাকা: ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে গত ২৪ জুন অনুষ্ঠিত সভার রেজুলেশন চেয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২৯ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল নকশার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদ, উদ্যান সংরক্ষণ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই উদ্যানকে মূলরূপে রাখার নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ মে হাইকোর্টে পরিবেশবাদী ছয়টি সংগঠনের পক্ষে ও একজন ব্যক্তি রিট করেন।
২০ মে রিটটি শুনানির জন্য উঠে। তখন রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চার সপ্তাহ শুনানি মুলতবি করেছিলেন আদালত।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে চলমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয় নিয়ে গত ২৪ জুন সভা হয়েছে। এর রেজুলেশন এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
আদালতের প্রশ্নে তিনি বলেন, রেজুলেশন চূড়ান্ত হলে পাওয়া যাবে।
রেজুলেশন চূড়ান্ত হলে তার অনুলিপি আদালতে উপস্থাপন করতে বলে আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন আদালত।
রিট আবেদনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণের (তৃতীয় প্রকল্প) নামে পুরাতন ও ঐতিহাসিক গাছ কেটে প্রকল্প নির্মাণ কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, মূল নকশার বাইরে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এরইমধ্যে যেসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে তা কেন অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ঢাকা মহানগরের মাস্টারপ্ল্যানের যেভাবে রয়েছে সেভাবে উদ্যান সংরক্ষণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না সেই মর্মে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে।
একইসঙ্গে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের জন্য গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব গাছ কাটা হয়েছে তার পরিবর্তে তিন গুণ গাছ লাগানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে বিবাদী করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফরমস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), নিজেরা করি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন এ রিট করেন।
এর আগে গত ০৬ মে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শতবর্ষী ও বিলুপ্তপ্রায় পাখিদের আশ্রয়স্থল গাছগুলো না কাটতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৮ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২১
ইএস/এসআরএস