ঢাকা: দারোয়ান সুবল চন্দ্র পাল হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি মাসুদ রানা (৩২) ও তার বন্ধু মিজানুর রহমান (২৬)। তাদের মধ্যে মাসুদ রানা হত্যার পরিকল্পনাকারী।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এদিন দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। সেই আবেদন মঞ্জুর করে বিচারক তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১১ জুলাই রাতে রাজধানীর উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরে ১০ নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাড়ির দারোয়ান সুবল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি জড়িত এ দুই আসামিকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মাসুদ রানা এক সময় রাজধানীর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডের ব্যবসায়ী হাসান ইমামের গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করতেন। গত প্রায় দুই মাস আগে তিনি চাকরি ছেড়ে সিরাজগঞ্জের একটি লুঙ্গি তৈরির কারখানায় গাড়িচালকের চাকরি নেন।
এরই মধ্যে আগের মালিকের বাসায় লুটপাটের ফন্দি আঁটে মাসুদ রানার মনে। বিষয়টি ডাকাত বন্ধু মিজানুর রহমানকে জানিয়ে দুজনে পরিকল্পনা করেন। লুটপাটের উদ্দেশ্যেই গত ১০ জুলাই তারা দু’জনই ঢাকা আসেন। আশ্রয় নেন ওই বাড়ির দারোয়ান সুবল চন্দ্র পালের কক্ষে। ঘটনার দিন ইয়াবা সেবনের পর গভীর রাতে লুটপাটের প্রস্তুতির উদ্দেশ্যে ঘুমন্ত সুবলের হাত-পা বাঁধতে গেলে শুরু হয় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি। একপর্যায় কক্ষের ভেতরে থাকা একটি কাঁচি দিয়ে সুবলের গলায় চেপে ধরেন মাসুদ রানা।
অপর পাশ দিয়ে নাইলনের দড়ি দিয়ে সুবলের গলা পেঁচিয়ে ধরেন। প্রাণে বাঁচার জন্য সুবল মাসুদের হাতে কামড় দেন। এ সময় সুবলের গলার ডানপাশে কাঁচি ঢুকিয়ে দেন মাসুদ। এরপর দু’জনে সুবলের গলাটিপে ধরে হত্যা নিশ্চিত করেন।
রাত সাড়ে ৩টার দিকে মাসুদ ও মিজানুর দুজনই কক্ষের পাশে থাকা পানির কলে রক্ত ধুয়ে দারোয়ানের চাবি দিয়ে গেট ঘুলে পালিয়ে যান। বাড়ির দারোয়ান সুবলকে হত্যার পর ভেস্তে যায় তাদের লুটপাটের পরিকল্পনা।
হত্যাকাণ্ডের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
** দারোয়ানকে হত্যার পর ভেস্তে যায় ডাকাতির পরিকল্পনা
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২১
কেআই/ওএইচ/