ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

খোঁজ নিলেন হাইকোর্ট, সুখে-শান্তিতে সংসার করছেন সেই দম্পতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২১
খোঁজ নিলেন হাইকোর্ট, সুখে-শান্তিতে সংসার করছেন সেই দম্পতি

ঢাকা: ফেনীতে কারাগারে বিয়ে করা সেই দম্পতির সংসার কেমন চলছে তার খোঁজ নিয়েছেন হাইকোর্ট। জবাবে আইনজীবী জানিয়েছেন, তারা সুখে-শান্তিতে সংসার করছেন।

সোনাগাজীর উত্তর চরদরবেশ গ্রামের জহিরুল ইসলাম জিয়ার সঙ্গে স্থানীয় এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে তাদের শারীরিক সম্পর্কও হয়। কিন্তু সেই সম্পর্ক শেষ অবধি বিয়েতে না গড়ানোয় ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়। সেই মামলায় জামিন নিতে হাইকোর্টে আবেদন করে ওই ছেলে। উভয় পক্ষের সম্মতি থাকলে কারাগারে বিয়ে হতে পারে। আর বিয়ে হলে জামিনও বিচেনায় আসতে পারে, আদালতের এমন অভিপ্রায়ের পর তারা বিয়ে করেন। পরে বিচারপতির এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন কোর্ট থেকে জামিন পান ওই যুবক।

এ মামলায় আইনজীবী ছিলেন ফারুক আলমগীর চৌধুরী। সোমবার (২৬ জুলাই) তিনি অন্য এক মামলায় শুনানি করছিলেন। এ সময় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আইনজীবীর কাছে ওই দম্পতির খোঁজ-খবর জানতে চান। তখন ফারুক আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমি মাঝে মধ্যেই ফোন করে তাদের খোঁজ-খবর নেই। তারা সুখে আছেন।

এ সময় আদালত বলেন, এটা নিয়ে নানা পত্রিকা নানা রকমভাবে লেখালেখি হয়েছিল। তাদের দাম্পত্য জীবনটা কেমন হয়, এটার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। এ কারণে অ্যাডভোকেট ফারুক আলমগীর চৌধুরীকে বলেছি সব সময় তাদের প্রতি খেয়াল রাখবেন।

পরে জানতে চাইলে ওই ছেলের বাবা সোনাগাজী উপজেলার উত্তর চরদরবেশ গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ান বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমতে ছেলে জিয়া ও পুত্রবধূ খুব ভালো আছে। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের দাম্পত্য কলহ নেই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দুই পরিবারের মধ্যেই ভালো সম্পর্ক বিরাজ করছে।

মেয়ের বাবা জানান, মেয়ে সুন্দরভাবেই সংসার করছে। আমরা চাই এভাবেই ওরা ভালো থাকুক। কোনো ধরনের কলহ আপাতত নেই। আমরা মাঝে মধ্যেই মেয়েকে দেখতে যাই।  

সংসার কেমন চলছে জানতে চাইলে জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ভালো আছি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুজ্জমান ভুট্টু বলেন, দুই পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি, তারা ভালো আছেন। ছেলে-মেয়ে ও তাদের পরিবারের মধ্যে কোনো ধরনের ঝামেলা আমরা দেখিনি। আশা করবো তারা বাকি জীবনও সুখে থাকবে।

সোনাগাজী উপজেলার উত্তর চরদরবেশ গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ানের ছেলে জহিরুল ইসলাম জিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী এক মেয়ের গভীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে উভয়ের সম্মতিতে তাদের শারীরিক সম্পর্কও হয়।

এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে দুই পরিবার তাদের বিয়ে দেওয়ার আলাপের উদ্যোগ নিচ্ছিল। কিন্তু উদ্যোগ সফল না হলে গত বছরের ২৭ মে মেয়ের পরিবার থানায় জিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। সে মামলায় পুলিশ জিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সবশেষ জিয়া হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। গত বছরের ১ নভেম্বর উভয় পরিবারের সম্মতিতে ওই মেয়েকে বিয়ে করলে জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে আদেশ দেন।

আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, উভয়পক্ষ সম্মত থাকলে ফেনী জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবে।

ফেনী জেলা কারাগারের জেল সুপার আনোয়ারুল করিম তখন জানিয়েছিলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা পেয়ে দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনাক্রমে তাদের বিয়ের তারিখ ধার্য করা হয়েছিল। সে মোতাবেক ১৯ নভেম্বর কনেসহ দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে পড়ানো হয়েছে।

পরে ৩০ নভেম্বর জিয়াকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

** অবশেষে জামিন পেলেন কারাগারে বিয়ে করা ফেনীর সেই যুবক

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২১
ইএস/এসএইচডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।