ঢাকা, সোমবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মেহেরপুরে স্বামী হত্যায় দায়ে স্ত্রীসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
মেহেরপুরে স্বামী হত্যায় দায়ে স্ত্রীসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন

মেহেরপুর: মেহেরপুর সদর উপজেলার বলিয়ারপুর গ্রামের আলম হত্যা মামলায় স্ত্রী সুফিয়া খাতুনসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন মেহেরপুর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস।

সাজাপ্রাপ্ত আলমের স্ত্রী সাফিয়া খাতুন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের আছান আলীর মেয়ে।

এছাড়া অন্যান্য সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের আসির উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে, খোকন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকর চন্দ্রপুর গ্রামের টেঙ্গর ওরফে হোসেন আলীর ছেলে মুকুল হোসেন এবং একই জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আসাদুল হক।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৩১ জুলাই মেহেরপুর সদর উপজেলার বলিয়ারপুর গ্রামের জনৈক আসামের পাটক্ষেত সংলগ্ন রাস্তার উপর অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। তখন মৃত ব্যক্তির দুই হাত কাঁচা পাট দিয়ে বাঁধা ছিল, গলায়, ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো অবস্থায় পড়েছিল। খবর পেয়ে মেহেরপুর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে মেহেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরে তার পরিচয় পাওয়া যায়। এবং তিনি বলিয়ারপুর গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে আলম বলে জানা যায়।

ওই ঘটনায় সদর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত আলী বাদী একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৭-৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীকালে বারাদী ক্যাম্প ইনচার্জ আব্দুস সালাম মিয়া প্রাথমিক তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৫ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দেন।

এতে আসামি আলমের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন, খোকন হোসেন, মুকুল হোসেন ও আসাদুল ইসলাম দোষী প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান কৌশলী ছিলেন।

উল্লেখ্য, নিহত আলমের স্ত্রী সুফিয়া খাতুনের সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরে অন্য আসামিরা আলম হোসেনকে কৌশলে ডেকে এনে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঘোড়ামার ব্রিজের ১০০ গজ দূরে মেহেরপুর সদর উপজেলার বলিয়ারপুর গ্রামের জনৈক আসান আলীর পাটক্ষেত সংলগ্ন স্থানে তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহ উদ্ধার করার পর তার পরিচয় মেলে। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে স্ত্রী সুফিয়া খাতুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সুফিয়া খাতুন পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তিতে অন্য আসামিদেরও গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সুফিয়া খাতুনের পরকীয়া ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পরিস্কার হয়। তখন ঘাতক সুফিয়া খাতুন জানান স্বামী আলম হোসেনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার পর স্বামীর মরদেহের পাশেই অবৈধ মিলন ঘটিয়ে উল্লাশ প্রকাশ করেছিলেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।