ঢাকা: অন্যের ফেসবুক আইডির একটি পোস্ট নিজ আইডিতে শেয়ার করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (বহিষ্কৃত) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মো. শাহজাহান শিশিরকে (৪৮) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।
শাহজাহান শিশিরের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল মজুমদার জানান, মামলাটিতে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশিরকে হাইকোর্ট ৬ সপ্তাহের জামিন দেন। এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী আসামি আত্মসমর্পণ করেছিলেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তিনি জানান, অন্য একজনের একটি পোস্ট তিনি তার আইডিতে অসাবধানতাবশত শেয়ার করেছিলেন। যে বিষয়ে পোস্টটি ছিল, সেই সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি মামলা করেননি। দুঃখজনকভাবে মামলায় আসামিকে জেলে যেতে হলো।
২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর মেহেদী হাসান মেরিন নামে একজন আইনজীবী ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি ধানমন্ডি থানাকে এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ধানমন্ডি থানা অভিযোগটি এহাজার হিসেবে নেয়।
মামলায় চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান শিশিরকে এক নম্বর এবং যিনি পোস্টটি দিয়েছিলেন সেই জনৈক জুয়েল সরকারকে ২ নম্বর আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২০ সালের ২৪ জুলাই চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির একটি পোস্ট তার ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন। পোস্টটি করেছিলেন ২ নম্বর আসামি জনৈক জুয়েল সরকার। ওই পোস্টের বক্তব্য ছিল এই—‘দেশে কোটি কোটি টাকা লুট হচ্ছে অথচ খালেদা জিয়া দুই কোটি টাকা লুটের জন্য জেলে!! আবার শাহজাহান শিশির ন্যায় হোক আর অন্যায়ে হোক প্রকৌশলীর গাঁয়ে হাত তোলায় বহিষ্কার!! এই দেশে কি কোনো দুর্নীতি কোনো ক্ষমতাবান ক্ষমতা দেখায় না? প্রশ্ন হলো দেশের বিচার করে কে, আর কচুয়ার বিচার করে কে? ও মাগো কত ঢংয়ের বিচার হচ্ছে এই দেশে.. থাক বেশি কিছু লিখলে কার আবার চুলকানি বেড়ে যাবে কারণ এই দেশে উচিৎ বলা এখন অনুচিৎ!!’
আসামিরা এ বক্তব্য পোস্ট ও শেয়ার করে দেশের সরকার ও বিচার ব্যবস্থাকে বিষোদগার করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
গত বছর ১৯ জুলাই কচুয়ায় সরকারি শহীদ স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন বহুতল একটির ভবনে কাজ মান নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী নূর আলমকে চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির মারধর করেন। ওই ঘটনার চারদিন পর স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চেয়ারম্যান শিশিরকে বরখাস্ত করা হয়।
এছাড়া ওই প্রকৌশলী শিশিরের বিরুদ্ধে কচুয়া থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় এবং জনৈক রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলায় ওই বছর ২৫ আগস্ট চাদপুর আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়। পরবর্তীতে তিনি জামিন পান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২১
কেআই/এমজেএফ