ঢাকা: ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য দিতে পারেনি ঠিক, তবে গ্রাহকের দায়-দেনা অস্বীকার করেনি। করোনায় বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যের খারাপ অবস্থার কারণে এমনটি হয়েছে।
শুনানিতে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইভ্যালি ৭০ লাখ গ্রাহককে পণ্য ডেলিভারি দিয়েছে। জুলাই মাস থেকে এ পর্যন্ত তিন লাখ গ্রাহকের অর্ডার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগস্ট মাসেই আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ছয় মাস সময় চেয়েছে। যে গ্রাহক মামলা করেছেন তার পণ্য নির্ধারিত ৪৫ দিনের দেওয়া হয়নি এটা ঠিক, তবে পণ্য ইভ্যালি দেবে না তা কখনও বলেনি। তাই এখানে প্রতারণা বা বিশ্বাস ভঙ্গের মতো ঘটনা ঘটেনি। সর্বোচ্চ চুক্তি প্রতিপালন না করায় চুক্তি আইনে দেওয়ানি মামলা হতে পারে। ফৌজদারি মামলার কোনো উপাদান এখানে নেই।
তিনি আরও বলেন, ইভ্যালি গ্রাহকের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে তা পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে দেয়। সেই পণ্য পেলে গ্রাহককে ডেলিভারি দেওয়া হয়। করোনা পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বেই ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা চলছে, তাই পণ্য ডেলিভারিতে একটু সমস্যা হয়েছে। ছয় মাস সময় পেলে আমরা গ্রাহকের দাবি মেটাতে পারতাম। তাই আমরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন চেয়েছি।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, একজন গ্রাহক মামলা করেছেন। এমন লাখ লাখ গ্রাহক একইভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। গ্রাহকের শত শত কোটি টাকা তারা আত্মসাৎ করেছেন। এ কাজে রাসেলের সঙ্গে আর কারা জড়িত সেই তথ্য উদঘাটন হওয়া দরকার। তাই তদন্ত কর্মকর্তার প্রার্থিত ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করা হোক।
শুনানি শেষে বিচারক দুজনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে রাসেল দম্পতিকে আদালতে আনা হয়। এ সময় মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ১০ দিনের হেফাজতে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশের উপপরিদর্শক ওহিদুল ইসলাম।
আসামিপক্ষে ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ ও জে আর খান রবিন রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে বিচারক তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশান থানায় আরিফ বাকের নামে এক ভুক্তভোগী প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগ এনে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা (নম্বর-১৯) দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৫০৬ ধারায় বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আরিফ বাকের গত ২৯ মে থেকে জুন মাস পর্যন্ত মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি পণ্য অর্ডার করেন। এগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা দেয়নি। কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে সমাধান পাওয়া যায়নি।
অফিসে গিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে তারা খারাপ ব্যবহার করেছে। সিইও রাসেলের সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। তার সঙ্গে ইভ্যালি চরম দুর্ব্যবহার করেছে বলেও অভিযোগে বলা হয়।
মামলার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে মোহাম্মদপুর স্যার সৈয়দ রোডের বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
কেআই/ওএইচ/