কক্সবাজার: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চতুর্থ দফায় প্রথম দিনে ১৫তম সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন গৃহবধূ ছেনুয়ারা বেগম, হাম জালাল ও আলী আকবর।
ছেনোয়ারা আদালতকে বলেন, টেকনাফ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ তার স্বামী আব্দুল জলিলকে ধরে নিয়ে থানার দ্বিতীয় তলায় সাত মাস আটকে রেখে নির্যাতন করেন।
একই দিনে সাক্ষ্য দেওয়া অপর সাক্ষী টেকনাফের ছোট হাবিরছড়ার বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য হাম জালালও ওসি প্রদীপের বিভিন্ন নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন। এ দু’জন ছাড়াও একইদিন আলী আকবর নামে আরেকজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সিনহা হত্যা মামলার তিনজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে সাক্ষী হাম জালালকে ওসি প্রদীপসহ তিন আসামির আইনজীবীরা জেরা সম্পন্ন করতে পারেননি। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) তাদের জেরা সম্পন্ন করবেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর মঙ্গলবার সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের চতুর্থ পর্যায়ের প্রথম দিন আদালতের কার্যক্রম শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
অপর দিকে ওসি প্রদীপের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সিনহার মামলাকে অতি দ্রুত শেষ করতে গিয়ে আসামিদের ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত এ মামলার প্রথম দফার সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং দুই নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা সঙ্গী সাহেদুল সিফাত। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের জেরা বাকি আছে।
গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় গত বছরের ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ ও বাহারছড়া থানার সাবেক তদন্ত ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১
এসবি/আরআইএস