ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

চুল কাটা: শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা?

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
চুল কাটা: শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা? ফারহানা বাতেন

ঢাকা: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

এক মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।

ওই তিন শিক্ষক হলেন- ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন, সহকারী শিক্ষক রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুন।

রুলে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের সামনে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়া এবং আত্মঘাতী হওয়ার দিকে ঠেলে দেওয়ার মতো এ ধরনের আইনবহির্ভূত শাস্তি দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।  

একইসঙ্গে ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন, সহকারী শিক্ষক রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুনের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে এবং আইনবহির্ভূত শাস্তির শিকার ১৪ শিক্ষার্থীকে ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।  

এছাড়া দেশের যেকোনো শিক্ষাঙ্গনে এ ধরনের নিপীড়ন ও নির্যাতনমূলক ঘটনা প্রতিরোধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য একটি আচরণবিধি প্রণয়নের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।

শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন, সহকারী শিক্ষক রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুন, সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

এর আগে রিট করেন তিনি।

এদিকে শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

রবির রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গত রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ে ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় অন্তত ১৩/১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। চুল কেটে দেওয়ায় অপমান সহ্য করতে না পেরে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নাজমুল হাসান তুহিন এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে ছাত্রদের দীর্ঘ বৈঠক হয় এবং প্রশাসনিক ভবন খুলে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
ইএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।