ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গৃহবধূ রিমা আক্তারকে হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত রিমার বাবা আব্দুল বাছির বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৩ আদালতে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন-রিমার স্বামী জুনাইদ মিয়া, শাশুড়ি মোছা. গুলচান বেগম, শ্বশুর শাহজাহান মিয়া ও শারমিন আক্তার। বাদী ও বিবাদি সবাই উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের বাসিন্দা।
মামলায় নিহত রিমার মরদেহ পুনঃময়নাতদন্তের আবেদন করা হয়েছে। আদালত মামলাটি সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে আদালতে এই মামলা দায়েরের পর মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য বাদীর পরিবারকে বিবাদিরা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে ইছাপুরা গ্রামের আব্দুল বাছিরের মেয়ে রিমার সঙ্গে ১০ লাখ টাকার কাবিননামায় একই গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে জুনাইদ মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য জুনাইদ প্রায়ই রিমাকে মারধর ও নির্যাতন করতো। রিমা সুখের কথা চিন্তা করে বাবার কাছ থেকে ওই সময় তিন লাখ টাকা যৌতুক এনে দেন৷ তারপর রিমা একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। কয়েকদিন যেতে না যেতে আবার জুনাইদ যৌতুকের টাকার জন্য রিমাকে অন্যায়ভাবে মারধর ও অত্যাচার শুরু করেন। জুনাইদ আরও পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। বাবার কাছ থেকে যৌতুকের টাকা দেয়নি বলে গত রোববার রাতে রিমাকে আবার মারধর করেন। ওইদিন দিনগত রাতে রিমার মুখে ও গলায় চেপে এবং বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
মামলার বাদী মো. আব্দুল বাছির অভিযোগ করে বলেন, রিমাকে হত্যার পর ফাঁসি ঝুলে আত্মহত্যা করার মিথ্যা কথা রটিয়েছেন তার স্বামী জুনাইদ মিয়া। হত্যাকারীরা এলাকার কিছু সালিশকারক নিয়ে বিষয়টি রফাদফা করার চেষ্টা করছেন।
তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমার পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। মেয়ে হারিয়ে এখন জীবন শংকায় আছেন। মেয়ে হত্যার বিচারের জন্য বিজয়নগর থানায় মামলা করতে গিয়ে মামলা করতে পারেনি। মেয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৩ আদালতে মামলা করেন।
ইছাপুরা গ্রামের মধ্যপাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার শাহজাহান মিয়া জানান, এটা পরিকল্পিত হত্যা। এ হত্যাটি আত্মহত্যা হতে পারে না। তারা রিমাকে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। তারা নিহত পরিবারের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
এই বিষয়ে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী তারিকুল ইসলাম খান রুমা জানান, আদালত মামলাটি তদন্ত করে সিআইডিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে আদেশ দিয়েছেন।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মুহাম্মদ হাসান জানান, রিমা নামে এক গৃহবধূ ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। এখনও ভিকটিমের পরিবারের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমাদের কাছে এলে অবশ্যই তাদের আইনি সহযোগিতা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২১
এএটি