ঢাকা: পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বেসরকারিখাতের সাউথ বাংলা এগ্রিকাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এসএম আমজাদ হোসেন ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব ও অস্থাবর সম্পদ ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে আমজাদ হোসেনের অস্থাবর সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক থেকে ২০ কোটি ৬০লাখ টাকা ঋণ তুলে আত্মসাতের অভিযোগে চলতি বছরের ২১ অক্টোবর আমজাদ হোসেনের নামে মামলা করেছে দুদক। মামলাটি অনুসন্ধান করছেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
গত ১৯ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এসএম আমজাদ হোসেন ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামীয় অস্থাবর সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আবেদন করেন গুলশান আনোয়ার প্রধান। শুনানি শেষে ২১ অক্টোবর বিচারক কে.এম ইমরুল কায়েশ অস্থাবর সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতের আদেশের আলোকে ২৪ অক্টোবর ব্যাংকগুলোর কাছে চিঠি পাঠিয়ে এসএম আমজাদ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নামীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব এবং অস্থাবর সম্পদ ফ্রিজ করে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে সাড়ে আট বছর পর চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যানের পদ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেনকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এসএম আমজাদ হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে বেনামে দেশে-বিদেশে কোম্পানি খুলে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের খুলনা শাখা ও কাটাখালী শাখা থেকে আমদানি-রপ্তানি এবং ঋণের আড়ালে নানাবিধ দুর্নীতি, অনিয়ম, জালিয়াতির মাধ্যমে আমানতকারীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত-পাচার করেছেন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআই্ইউ) তদন্ত করে অর্থ পাচারের প্রমাণও পেয়েছে। এসব নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রতিবেদন দিয়েছে বিএফআইইউ। ঋণ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনেরও প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
গুলশান আনোয়ার প্রধান আদালতকে জানিয়েছেন এসএম আমজাদ হোসেনের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অর্থ অন্যত্র স্থানান্তর বা বেহাত করারও চেষ্টা করছেন আমজাদ হোসেন।
অর্থ পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ছাড়াও আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে বাগেরহাটে রেলওয়ের জমি দখল, হিমায়িত খাদ্য রপ্তানির নামে বন্ডেড সুবিধায় আনা কাগজ খোলা বাজারে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। ২৫০ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে লকপুর গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা অক্টোবর ২৫, ২০২১
এসই/এমএমজেড