খুলনা: পৃথক দুই মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড ও আরেক জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) পৃথক সময়ে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে ও খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারকরা এ রায় দেন।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী ও খুলনা সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কর্মচারী মাহবুব হত্যা মামলায় মিন্টু রহমান নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ হত্যা মামলার অপর একটি ধারায় (৩৮০) মিন্টুকে এক বছরের সশ্রম করাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম করাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক তসনীম জোহরা এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি মিন্টু পলাতক ছিলেন। মিন্টু ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের মৃত হাবিবর রহমানের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মাহবুব তার পৈত্রিক জমিতে ঘেরের ব্যবসা করতেন। ঘেরে থাকা অবস্থায় তিনি প্রায়ই কর্মচারীদের সঙ্গে মাদক সেবন করতেন। মাদক ক্রয়ের টাকা ফেরত চাওয়া ও একাই মাদক সেবন করায় গত ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর রাত ১২টার দিকে মাহবুব ও তার কর্মচারী মিন্টুর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মাহবুব ওই কর্মচারীকে থাপ্পড় মারেন। এর প্রতিশোধ নিতে ওই দিন রাত ১টার দিকে মিন্টু ঘেরের ভেতরে থাকা বটি দিয়ে মাহবুবকে কুপিয়ে জখম করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করে মিন্টু ঘের থেকে পালিয়ে যান।
খোঁজ না পেয়ে পরেরদিন মাহবুবের স্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলার চক আহসানখালীর ওই ঘেরে গিয়ে মাহবুবকে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। এ ঘটনার দু’দিন পরে মাহবুবের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে নেমে ঘেরের কর্মচারী আলমগীর কবির খোকন ও জাহাঙ্গীর কবিরকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের মাধ্যমে অপর কর্মচারী মিন্টুকে যশোরের ঝিকরগাছা থেকে গ্রেফতার করা হয়। মিন্টু আদালতের কাছেও ১৬৪ ধারায় খুনের বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ২০১৩ সালের ২২ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডুমুরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তাজুল ইসলাম মিন্টুকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
এদিকে মাদক মামলায় কাজল নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় কাজল পলাতক ছিলেন। কাজল নগরীর ইস্ট লিংক রোডের বদরুদ্দোজার বাড়ির ভাড়াটিয়া মৃত জাকির হোসেনের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৬ মে দুপুর ১টার দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর খুলনা গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা কাজলের বাড়ি ঘেরাও করেন। এরপর তারা কাজলের ঘরের খাটের নিচে রাখা একটি ব্যাগ থেকে ৬২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। যার অনুমানিক মূল্য ৬২ হাজার টাকা।
গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক পারভীন আক্তার বাদী হয়ে খুলনা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কাজলের নামে মামলা দায়ের করেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় ‘ক’ সার্কেলের পরিদর্শক হাওলাদার মো. সিরাজুল ইসলাম একই বছরের ৯ জুন কাজলকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত আট জন সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২১
এমআরএম/আরআইএস