ঢাকা: ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চিফ রিটাচার। অবসর নিয়েছেন ২০০৭ সালে।
এই পরোয়ানা দেখে হতবিহ্বল হয়ে নরসিংদীর কালিকাপুরের সত্তরোর্ধ্ব মো. সিদ্দিকুর রহমান উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন।
রোববার (৭ নভেম্বর) ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এস আরেফিন জুন্নুন।
ঘটনার শুরু হয়, ২০০৫ সালের ২ নভেম্বর। ধানমন্ডির রূপসা কমিউনিটি সেন্টারের পাশে রাস্তার ফুটপাতে ৪ ব্যক্তিকে ৩শ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করে র্যাব-২। পরে তাদের নামে মামলা দিয়ে থানায় হস্তান্তর করে। ওই চারজনের মধ্যে একজন তার পরিচয় দেন নরসিংদীর কালিকাপুরের মো. নুরু মিয়ার ছেলে সিদ্দিক (৩৩)। এ মামলার তদন্ত করেন ধানমন্ডি থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদা ইয়াসমিন।
পরে ওই চারজন জামিন নিয়ে পলাতক। বিচার শেষে এ মামলায় ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত রায় দেন। রায়ে আসামিদের ছয় মাসের দণ্ড দেন। পরে ঠিকানা অনুসারে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়।
আইনজীবী এস এস আরেফিন জুন্নুন জানান, ঠিকানা অনুসারে নরসিংদীতে পরোয়ানা যায়। কিন্তু কেউ একজন রিট আবেদনকারীর নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। রিট আবেদনকারীর নরসিংদীর সদরের কালিকাপুর গ্রামের নুরু মিয়া এবং কুরফুলের নেসার ছেলে সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চিফ রিটাচার পদে চাকরি করতেন। তিনি ২০০৭ সালের ১৬ মে অবসরেও যান।
আরেফিন জুন্নুন আরও জানান, আসামিদের যখন ২০০৫ সালে গ্রেফতার দেখানো হয় তখন তিনি অফিস করেছিলেন। আর যখন ওই ঘটনা ঘটেছিল তখন রিট আবেদনকারীর বয়স ছিল ৫০ এর ওপরে। আর গ্রেফতার ব্যক্তির বয়স দেখিয়েছিল ৩৩ বছর। যদি এই আবেদনকারী আসল আসামি হতো তাহলে তিনি কিভাবে অফিস করেছেন। কারণ আসামিরা তো তখন গ্রেফতার হয়েছিল। একটা সময় এসে এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করেননি তদন্ত কর্মকর্তা। তাহলে আসল বিষয়টা বেরিয়ে আসতো।
হঠাৎ করে পরোয়না থেকে বিব্রত হয়ে মো. সিদ্দিকুর রহমান রিট করেন।
শুনানি শেষে ওই মামলার রায় অনুসারে সাজামূলের পরোয়ানা নিয়ে সিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেফতারের কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাকে হয়রানি বা গ্রেফতার না করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
এছাড়া সাজামূলে গ্রেফতারি পরোয়না দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। একইসঙ্গে মূল অভিযুক্তকে শনাক্তে এবং ঘটনা তদন্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ঢাকা জেলা প্রশাসক, ডিআইজি প্রিজন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফরিদা ইয়াসিনসহ সংশ্লিষ্ট আটজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২১
ইএস/এএটি