ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মা-মেয়েকে ধর্ষণ, ‘জ্বীনের বাদশা’ চক্রের তিনজনের যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
মা-মেয়েকে ধর্ষণ, ‘জ্বীনের বাদশা’ চক্রের তিনজনের যাবজ্জীবন ...

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে মা-মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় প্রতারক জ্বীনের বাদশা চক্রের তিন সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

মামলায় দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। দণ্ডিতরা প্রতারক জ্বীনের বাদশা চক্রের সদস্য।
 
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
 
সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন- বেলাল হোসেন (৪০), এমদাদুল হক (৪০) ও খাজা মিয়া (৩৮)। তাদের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। একই মামলার অপর দুইজন আসমিকে খালাস দেন আদালত। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম (২৫) ও আজিজুল ইসলাম (৩৫)।
 
বিকেলে রায় ঘোষণার বিয়ষটি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহিবুল হক সরকার বাংলানিউজেকে জানান, সাজাপ্রাপ্ত তিনজনই প্রতারক চক্র জ্বীনের বাদশার সদস্য। তারা গুপ্তধন পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন এবং মা ও মেয়েকে ধর্ষণ করেন।   
 
মামলার বিবরণে জানা যায়, দীর্ঘদিন আগে খাজা মিয়া গভীর রাতে জ্বীনের বাদশার পরিচয় দিয়ে জামালপুর জেলার বাসিন্দা মা ও মেয়েকে তিনটি নম্বর থেকে ফোন দেন। গুপ্তধন দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে চার দফায় বিকাশের মাধ্যমে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সর্বশেষ গুপ্তধন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৮ সালের ৬ মে দুপুরে ফোন দিয়ে মা ও মেয়েকে মাজার জিয়ারত করতে নিয়ে যাবেন বলে গোবিন্দগঞ্জে আসতে বলেন। তাদের কথামত একই সালের ১১ মে তারা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের বালুয়া বাজারে আসেন। আসামিরা ওইদিন রাতেই তাদের মাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেলে তোলেন। তারপর ভোর রাতে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে মা ও মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন তারা। পরে টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়ে মা ও মেয়েকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরে নামিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যান।
 
ওই সালের ১২ মে ধর্ষণের শিকার মা বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে খাজা মিয়াকে গ্রেফতার করে।
 
গ্রেফতার খাজা মিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বেলাল হোসেন ও এমদাদুল হককে গ্রেফতার করা হয়। পরে আসাদুল ও আজিজুলকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার করা হয়। সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এক লাখ করে টাকা জরিমানা করা হয়। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় অপর দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়।  
 
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।