বরিশাল: পরকীয়া প্রেমিকের বাসায় বেড়াতে গিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বামীকে হত্যা করে নদীতে মরদেহ ফেলে দেওয়ার মামলায় স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে বরিশাল জননিরাপত্তা অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক টিএম মুসা এ রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জননিরাপত্তা অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী জাহিদুল ইসলাম।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ চাঁদপাশা গ্রামের আব্দুস সত্তার হাওলাদারের মেয়ে শারমিন জাহান সুমা এবং তার পরকীয়া প্রেমিক বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা এলাকার আব্দুল মন্নান ফকিরের ছেলে মনির হোসেন ফকির।
জানা গেছে, শারমিন জাহান সুমার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রামের সিকদার বাড়ির আবদুল জব্বার সিকদারের ছেলে মো. কবিরুল ইসলাম লিটনের। তিনি দুবাই প্রবাসী ছিলেন। ৯ বছর ধরে দুবাইতে থাকা লিটন ১৩ বছর আগে সুমাকে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে। লিটন দুবাইতে থাকা অবস্থায় সুমা তার খালাতো ভাই মনির হোসেন ফকির ওরফে উজ্জ্বলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ঘটনার দুইদিন আগে লিটন দুবাই থেকে দেশে ফেরেন। ঘটনার দিন দুবাইতে থাকা মাধবপাশা গ্রামের এক প্রবাসীর পাঠানো মালপত্র পৌঁছে দিতে বাসা থেকে বের হন লিটন। এরপর তিনি নিখোঁজ হন।
সিআইডির তদন্তে উঠে আসে, ২০১৪ সালের ৩০ মার্চ বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দায় স্ত্রীর খালাতো ভাই মনির হোসেন ফকিরের বাসায় বেড়াতে যান লিটন ও তার স্ত্রী। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে হত্যা করে কীর্তনখোলা নদীতে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়। ওই বছরের ৩ এপ্রিল কীর্তনখোলা নদী থেকে লিটনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওইদিনই বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) হেমায়েত কবির বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্তে পরকীয়ার কারণে লিটন খুন হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। পরে সুমা এবং মনিরকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন।
২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২১
এমএস/আরএ