ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মুরাদের ১৫ অডিও-ভিডিও অপসারণ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২১
মুরাদের ১৫ অডিও-ভিডিও অপসারণ

ঢাকা: সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের অসৌজন্যমূলক ও বিতর্কিত অডিও-ভিডিও চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) আইনজীবীরা। এর মধ্যে ফেসবুক থেকে ১৫টি ও ইউটিউব থেকে ২টি অপসারণ করা হয়েছে।

বুধবার (৮ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।  

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের মৌখিক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সরাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।  

এর আগে, আদালতে আইনজীবী সুমন বলেন, জরুরিভিত্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিওগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। অপসারণ না করলে অল্প বয়সের ছেলে-মেয়েরা এই ধরনের গালাগালি এবং অশ্লীল কথা বার্তা শুনে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিও দ্রুত সরাতে বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা প্রার্থনা করছি।  

এরপর আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারকে বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ওই অডিও-ভিডিওগুলো সরানোর পদক্ষেপ নিতে বলেন। এ বিষয়ে বুধবার অগ্রগতি  আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেন।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্য সম্পর্কে বক্তব্য দেন। তার ওই বক্তব্যে নারী বিদ্বেষের অভিযোগ ওঠে।

এরপর নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁস হয়। মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের ফোনে কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ফোনালাপে তিনি অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেন। অশ্লীল ভাষায় মাহিকে তার সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দেন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠিয়ে তুলে আনার হুমকি দেন মুরাদ হাসান।

এসব ঘটনায় বিভিন্ন দিক থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে তার এ ধরনের বক্তব্য ও মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান আলোচনা-সমালোচনায় এসেছেন। একে একে তার বিষয়গুলো বর্তমান পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। ৬ ডিসেম্বর সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে তথ্য প্রতিমন্ত্রী নারী বিদ্বেষী বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছিলেন বিষয়টি নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো। ওই দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

পরদিন মঙ্গলবার সকালেই প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান মুরাদ হাসান।

পরে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একজন কর্মকর্তা পৌঁছে দেন। সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।

এর আগে, মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১/১০৪৭ ঘণ্টা
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।