ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পিপলস লিজিংয়ের ১৪ ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২১
পিপলস লিজিংয়ের ১৪ ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ঢাকা: আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের (পিএলএফএসএল) ঋণ খেলাপি ১১ প্রতিষ্ঠানসহ ১৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) পিপলস লিজিংয়ের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ  এ আদেশ দেন।

তাদের আগামী ৯ জানুয়ারি আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে  ছিলেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানজিব উল আলম।

১৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হচ্ছে, নাহার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কোম্পানি নামে তিনটি, এস এস ফিলিং স্টেশন, বাধন ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, শোভা ইন্টারন্যাশনাল (প্রা.) লিমিটেড, সামীর কাদের চৌধুরী, সামিয়া কাদের চৌধুরী, সাজিয়া কাদের চৌধুরী, জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের নামে দুটি, জেসন অ্যাগ্রোভেট লিমিটেড, জেসন ব্রিডাস লিমিটেড ও জেসন ন্যাচারাল প্রডাক্ট লিমিটেড।

এর আগে গত ১২ জুলাই প্রতিষ্ঠান টি পরিচালনা বোর্ড গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল উল আলমকে চেয়ারম্যান করে এ বোর্ড গঠন করা হয়।

বোর্ডের সদস্যরা হলেন, সাবেক সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হাসান শাহীদ ফেরদৌস,পুবালী ব্যাংকের সাবেক এমডি আব্দুল হালিম চৌধুরী, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী তৌফিকুল ইসলাম, নুর-এ-খোদা আব্দুল মবিন এফসিএ, মওলা মোহাম্মদ এফসিএ, সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি ড.নাশিদ কামাল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড.নুরুল কবির এবং এমডি হিসেবে থাকবেন আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন।   

গত ২৮ জুন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডকে (পিএলএফএসএল) পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

আদালতে আমানতকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানজীব-উল আলম। আর পিএলএফএসএলের সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুইডেটর) মো. আসাদুজ্জামানের পক্ষে  ছিলেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো.খুরশীদ আলম খান।

২৮ জুন মেজবাহুর রহমান জানিয়েছিলেন, ২০১ জন আমানত কারী একটি আবেদন করেছিলেন। আবেদনে তারা বলেছেন, পিপলস লিজিংকে রিভাইভ বা রিকনস্ট্রাকশ করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে  বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য শোনার পর আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পিপলস লিজিং রিভাইভ করা হবে। সুতরাং পিপলস লিজিংয়ের বিরুদ্ধে অবসায়নের কার্যক্রম আর হচ্ছে না। এখন পিপলস লিজিং পুনরুজ্জীবিত হলো। এ জন্য একটি বোর্ড করে দেবেন আদালত।  

বৃহস্পতিবার এই আইনজীবী জানান, আদালতের আদেশ অনুসারে ৩০ দিনের মধ্যে ডাউনপেমেন্টের মাধ্যমে ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য ঋণ গ্রহীতাদের নির্দেশ দেয়া হয়।   অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে বলেও আদেশে বলা হয়। এর মধ্যে ২১ জনের সঙ্গে পিএলএফএসএল যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। ছয়জন আদেশ অনুসারে ডাউনপেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করে। একজন অসুস্থ। অপর ১৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আবেদনটি করা হয়।

হাইকোর্ট তিন ব্যক্তি ও ১১ প্রতিষ্ঠানের প্রতি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছেন।

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিনই মামলার শুনানি শেষে অবসায়নের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া অবসায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজনকে অবসায়ক নিয়োগ দিতে বলা হয়। পরে সাময়িক অবসায়ক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ওই মামলার ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে আদালত পিপলস লিজিংয়ের বিভিন্ন ঋণ খেলাপিদের  তলবও করেছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
ইএস/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।